প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
শ্মশানের অধীশ্বর-পদে।
রমাবাই। জ্বালো চিতা,
সৈন্যগণ! ঘেরো আসি বন্দিনীরে।
অমাবাই। পিতা!
বিনায়ক রাও। ভয় নাই, ভয় নাই। হায় বৎসে, হায়!
মাতৃহস্ত হতে আজি রক্ষিতে তোমায়
পিতারে ডাকিতে হল। যেই হস্তে তোরে
বক্ষে বেঁধে রেখেছিনু, কে জানিত ওরে
ধর্মেরে করিতে রক্ষা, দোষীরে দণ্ডিতে
সেই হস্তে একদিন হইবে খণ্ডিতে
তোমারি সৌভাগ্যসূত্র হে বৎসে আমার।
অমাবাই। পিতা!
বিনায়ক রাও। আয় বৎসে! বৃথা আচার বিচার।
পুত্রে লয়ে মোর সাথে আর মোর মেয়ে
আমার আপন ধন। সমাজের চেয়ে
হৃদয়ের নিত্যধর্ম সত্য চিরদিন।
পিতৃস্নেহ নির্বিচার বিকারবিহীন
দেবতার বৃষ্টিসম, আমার কন্যারে
সেই শুভ স্নেহ হতে কে বঞ্চিতে পারে —
কোন্ শাস্ত্র, কোন্ লোক, কোন্ সমাজের
মিথ্যা বিধি, তুচ্ছ ভয়?
রমাবাই। কোথা যাস্। ফের্।
রে পাপিষ্ঠে, ওই দেখ্ তোর লাগি প্রাণ
যে দিয়েছে রণভূমে তার প্রাণদান
নিষ্ফল হবে না, তোরে লইবে সে সাথে
বরবেশে ধরি তোর মৃত্যুপূত হাতে
শূরস্বর্গমাঝে। শুন, যত আছ বীর,
তোমরা সকলে ভক্ত ভৃত্য জীবাজির —
এই তাঁর বাগ্দত্তা বধূ, চিতানলে
মিলন ঘটায়ে দাও, মিলিয়া সকলে
প্রভুকৃত্য শেষ করো।
সৈন্যগণ। ধন্য পুণ্যবতী।