ফাল্গুনী

কোটাল। আমি কোটাল, পথ-চলতি যাদের দেখি সবাই এক ছাঁদের। তাই অদ্ভুত কিছু দেখলেই চোখে ঠেকে।

ঐ শোনো! পাড়ার ভদ্রলোকমাত্রই ঐ কথা বলে — আমরা অদ্ভুত।

আমরা অদ্ভুত বৈকি, কোনো ভুল নেই।

কোটাল। কিন্তু তোমরা ছেলেমান্‌‍ষি করছ।

ঐ রে, আবার ধরা পড়েছি। দাদাও ঠিক ঐ কথাই বলে।

অতি প্রাচীন কাল থেকে আমরা ছেলেমান্‌‍ষিই করছি।

ওতে আমরা একেবারে পাকা হয়ে গেছি।

চন্দ্রহাস। আমাদের এক সর্দার আছে, সে ছেলেমান্‌‍ষিতে প্রবীণ। সে নিজের খেয়ালে এমনি হুহু করে চলেছে যে তার বয়েসটা কোন্‌ পিছনে খসে পড়ে গেছে, হুঁশ নেই।

কোটাল। আর তোমরা?

আমরা সব বয়সের গুটি-কাটা প্রজাপতি।

কোটাল। ( জনান্তিকে মাঝির প্রতি) পাগল রে, একেবারে উন্মাদ পাগল!

মাঝি। বাপু, এখন তোমরা কী করবে।

চন্দ্রহাস। আমরা যাব।

কোটাল। কোথায়।

চন্দ্রহাস। সেটা আমরা ঠিক করি নি।

কোটাল। যাওয়াটাই ঠিক করেছ কিন্তু কোথায় যাবে সেটা ঠিক কর নি?

চন্দ্রহাস। সেটা চলতে চলতে আপনি ঠিক হয়ে যাবে।

কোটাল। তার মানে কি হল।

তার মানে হচ্ছে —

গান

চলি গো, চলি গো, যাই গো চলে।

পথের প্রদীপ জ্বলে গো

গগন-তলে।

বাজিয়ে চলি পথের বাঁশি,

ছড়িয়ে চলি চলার হাসি,

রঙিন বসন উড়িয়ে চলি

জলে স্থলে।

কোটাল। তোমরা বুঝি কথার জবাব দিতে হলে গান গাও?

হাঁ। নইলে ঠিক জবাবটা বেরয় না। সাদা কথায় বলতে গেলে ভারি অস্পষ্ট হয়, বোঝা যায় না।

কোটাল। তোমাদের বিশ্বাস, তোমাদের গানগুলো খুব পষ্ট?

চন্দ্রহাস। হাঁ, ওতে সুর আছে কিনা।