প্রায়শ্চিত্ত
যশোহর। প্রতাপাদিত্যের কক্ষ
বসন্ত রায়ের প্রবেশ

বসন্ত রায়। বাবা প্রতাপ, উদয়কে আর কেন কষ্ট দাও? পদে পদেই যদি সে তোমাদের কাছে অপরাধ করে, তবে তাকে এই বুড়োর কাছে দাও না। ( প্রতাপ নিরুত্তর) তুমি যা মনে করে উদয়কে শাস্তি দিচ্ছ সেই অপরাধ যে যথার্থ আমার। অমিই যে রামচন্দ্র রায়কে রক্ষা করবার জন্যে চক্রান্ত করেছিলুম।

প্রতাপাদিত্য। খুড়োমশায়, বৃথা কথা বলে আমার কাছে কোনোদিন কেউ ফল পায় নি।

বসন্ত রায়। ভালো, আমার আর একটি ক্ষুদ্র প্রার্থনা আছে। আমি একবার কেবল উদয়কে দেখে যেতে চাই— আমাকে তার সেই কারাগৃহে প্রবেশ করতে কেউ যেন বাধা না দেয় এই অনুমতি দাও।

প্রতাপাদিত্য। সে হতে পারবে না।

বসন্ত রায়। তাহলে আমাকে তার সঙ্গে এক সঙ্গে বন্দী করে রাখো। আমাদের দুজনেরই অপরাধ এক-দণ্ডও এক হোক— যতদিন সে কারাগারে থাকবে আমিও থাকব।

[ নীরবে প্রতাপের প্রস্থান

সীতারামের প্রবেশ ও প্রণাম

বসন্ত রায়। কী সীতারাম খবর কী?

সীতারাম। খবর পরে বলব। এখন শীঘ্র একবার আপনাকে আমার সঙ্গে আসতে হবে। বিলম্ব করবেন না।

বসন্ত রায়। কেন সীতারাম। কোথায় যেতে হবে?

বসন্ত রায়ের কানে কানে সীতারামের ভাষণ

(বিস্ফারিত নেত্রে) অ্যাঁ। সত্যি নাকি।

সীতারাম। মহারাজ কথা কবার সময় নেই শীঘ্র আসুন।

বসন্ত রায়। একবার বিভার সঙ্গে দেখাটা করে আসি না?

সীতারাম। না, সে হয় না— আর দেরি না।

বসন্ত রায়। তবে কাজ নেই— চলো (অগ্রসর হইয়া) কিন্তু বেশি দেরি হত না— একবার দেখা করেই চলে আসতুম।

সীতারাম। না মহারাজ, তাহলে বিপদ হবে।

[ প্রস্থান