রাজা ও রানী
প্রথম অঙ্ক
প্রথম দৃশ্য
জালন্ধর
প্রাসাদের এক কক্ষ
বিক্রমদেব ও দেবদত্ত

  দেবদত্ত।  মহারাজ, এ কী উপদ্রব!

বিক্রমদেব।                           হয়েছে কী!

  দেবদত্ত।  আমাকে বরিবে নাকি পুরোহিত-পদে?

কী দোষ করেছি প্রভো? কবে শুনিয়াছ

ত্রিষ্টুভ অনুষ্টুভ এই পাপমুখে?

তোমার সংসর্গে পড়ে ভুলে বসে আছি

যত যাগযজ্ঞবিধি। আমি পুরোহিত?

শ্রুতিস্মৃতি ঢালিয়াছি বিস্মৃতির জলে।

এক বই পিতা নয় তাঁরি নাম ভুলি,

দেবতা তেত্রিশ কোটি গড় করি সবে।

স্কন্ধে ঝুলে পড়ে আছে শুধু পৈতেখানা

তেজোহীন ব্রহ্মণ্যের নির্বিষ খোলস।

বিক্রমদেব।  তাই তো নির্ভয়ে আমি দিয়েছি তোমারে

পৌরোহিত্যভার। শাস্ত্র নাই, মন্ত্র নাই,

নাই কোনো ব্রহ্মণ্য-বালাই।

  দেবদত্ত।                           তুমি চাও

নখদন্তভাঙা এক পোষা পুরোহিত!

বিক্রমদেব।  পুরোহিত, একেকটা ব্রহ্মদৈত্য যেন।

একে তো আহার করে রাজস্কন্ধে চেপে

সুখে বারো মাস, তার পরে দিনরাত

অনুষ্ঠান, উপদ্রব, নিষেধ, বিধান,

অনুযোগ, অনুস্বর-বিসর্গের ঘটা —

দক্ষিণায়-পূর্ণ হস্তে শূন্য আশীর্বাদ।

  দেবদত্ত।  শাস্ত্রহীন ব্রাহ্মণের প্রয়োজন যদি