রাজা ও রানী
ষষ্ঠ দৃশ্য
অন্তঃপুর
পুষ্পোদ্যান
বিক্রমদেব ও রাজমাতুল বৃদ্ধ অমাত্য

বিক্রমদেব।  শুনো না অলীক কথা, মিথ্যা অভিযোগ —

যুধাজিৎ, জয়সেন, উদয়ভাস্কর,

সুযোগ্য সুজন। একমাত্র অপরাধ

বিদেশী তাহারা। তাই এ রাজ্যের মনে

বিদ্বেষ-অনল উদগারিছে কৃষ্ণধূম

নিন্দা রাশি রাশি।

   ‌অমাত্য।                        সহস্র প্রমাণ আছে,

বিচার করিয়া দেখো।

বিক্রমদেব।                          কী হবে প্রমাণ?

চলিছে বিশাল রাজ্য বিশ্বাসের বলে —

যার ’পরে রয়েছে সে ভার, সযতনে

তাই সে পালিছে। প্রতিদিন তাহাদের

বিচার করিতে হবে নিন্দাবাক্য শুনে,

নহে ইহা রাজধর্ম। আর্য, যাও ঘরে,

করিয়ো না বিশ্রামে ব্যাঘাত।

   অমাত্য।                           পাঠায়েছে

মন্ত্রী মোরে ; সানুনয়ে করিছে প্রার্থনা

দর্শন তোমার, গুরু রাজকার্য-তরে।

বিক্রমদেব।  চিরকাল আছে রাজ্য, আছে রাজকার্য —

সুমধুর অবসর শুধু মাঝে মাঝে

দেখা দেয়, অতি ভীরু, অতি সুকুমার।

ফুটে ওঠে পুষ্পটির মতো, টুটে যায়

বেলা না ফুরাতে। কে তারে ভাঙিতে চাহে

অকালে চিন্তার ভারে? বিশ্রামেরে জেনো

কর্তব্য কাজের অঙ্গ।

   অমাত্য।                       যাই মহারাজ।