প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
সেই তপোবন হইতে শকুন্তলা যখন যাইতেছে, তখন কণ্ব ডাক দিয়া বলিলেন, ‘ওগো সন্নিহিত তপোবন-তরুগণ –
তো মাদের জল না করি দান
যে আগে জল না করিত পান,
সাধ ছিল যার সাজিতে, তবু
স্নেহে পাতাটি না ছিঁড়িত কভু,
তোমাদের ফুল ফুটিত যবে
যে জন মাতিত মহোৎসবে,
পতিগৃহে সেই বালিকা যায়,
তোমরা সকলে দেহ বিদায়। '
চেতন-অচেতন সকলের সঙ্গে এমনি অন্তরঙ্গ আত্মীয়তা, এমনি প্রীতি ও কল্যাণের বন্ধন!
শকুন্তলা কহিল, ‘হলা প্রিয়ংবদে, আর্যপুত্রকে দেখিবার জন্য আমার প্রাণ আকুল, তবু আশ্রম ছাড়িয়া যাইতে আমার পা যেন উঠিতেছে না। '
প্রিয়ংবদা কহিল, ‘তুমিই যে কেবল তপোবনের বিরহে কাতর, তাহা নহে, তোমর আসন্নবিয়োগে তপোবনেরও সেই একই দশা–
মৃগের গলি' পড়ে মুখের তৃণ,
ময়ূর নাচে না যে আর,
খসিয়া পড়ে পাতা লতিকা হতে
যেন সে আঁখিজলধার। '
শকুন্তলা কণ্বকে কহিল, ‘তাত, এই-যে কুটিরপ্রান্তচারিণী গর্ভমনথরা মৃগবধূ, এ যখন নির্বিঘ্নে প্রসব করিবে তখন সেই প্রিয় সংবাদ নিবেদন করিবার জন্য একটি লোককে আমার কাছে পাঠাইয়া দিয়ো। '
ক ণ্ব কহিলেন, ‘আমি কখনো ভুলিব না। '
শকুন্তলা পশ্চাৎ হইতে বাধা পাইয়া কহিল, ‘আরে, কে আমার কাপড় ধরিয়া টানে? ' কণ্ব কহিলেন, ‘বৎসে–
ইঙ্গুদির তৈল দিতে স্নেহসহকারে
কুশক্ষত হলে মুখ যার,
শ্যামাধান্যমুষ্টি দিয়ে পালিয়াছ যারে
এই মৃগ পুত্র সে তোমার। '
শকুন্তলা তাহাকে কহিল, ‘ওরে বাছা, সহবাসপরিত্যাগিনী আমাকে আর কেন অনুসরণ করিস? প্রসব করিয়াই তোর জননী