প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
দাদাঠাকুর। হাঁ বাজছে।
পঞ্চক। আমার আর থাকবার জো নেই।
দাদাঠাকুর। কেন।
পঞ্চক। আজ আমাদের দীপকেতন পূজা।
দাদাঠাকুর। কী করতে হবে।
পঞ্চক। আজ ডুমুরতলা থেকে মাটি এনে সেইটে পঞ্চগব্য দিয়ে মেখে বিরোচন মন্ত্র পড়তে হবে। তার পরে সেই মাটিতে ছোটো ছোটো মন্দির গড়ে তার উপরে ধ্বজা বসিয়ে দিতে হবে। এমন হাজারটা গড়ে তবে সূর্যাস্তের পরে জলগ্রহণ।
দাদাঠাকুর। ফল কী হবে।
পঞ্চক। প্রেতলোকে পিতামহদের ঘর তৈরি হয়ে যাবে।
দাদাঠাকুর। যারা ইহলোকে আছে তাদের জন্যে—
পঞ্চক। তাদের জন্যে ঘর এত সহজে তৈরি হয় না। চললুম ঠাকুর, আবার কবে দেখা হবে জানি নে। তোমার এই হাতের স্পর্শ নিয়ে চললুম—এ-ই আমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে—এ-ই আমার নাগপাশ-বাঁধন আলগা করে দেবে। ওই আসছে শোণপাংশুর দল—আমরা এখানে বসে আছি দেখে ওদের ভালো লাগছে না, ওরা ছট্ফট্ করছে। তোমাকে নিয়ে ওরা হুটোপাটি করতে চায়—করুক, ওরাই ধন্য, ওরা দিনরাত তোমাকে কাছে পায়।
দাদাঠাকুর। হুটোপাটি করলেই কি কাছে পাওয়া যায়। কাছে আসবার রাস্তাটা কাছের লোকের চোখেই পড়ে না।
প্রথম শোণপাংশু। ও কী ভাই পঞ্চক, যাও কোথায়?
পঞ্চক। আমার সময় হয়ে গেছে, আমাকে যেতেই হবে।
দ্বিতীয় শোণপাংশু। বাঃ, সে কি হয়? আজ আমাদের বনভোজন, আজ তোমাকে ছাড়ছি নে।
পঞ্চক। না ভাই, সে হবে না— ঐ কাঁসর বাজছে।
তৃতীয় শোণপাংশু। কিসের কাঁসর বাজছে?
পঞ্চক। তোরা বুঝবি নে। আজ দীপকেতন পূজা—আজ ছেলেমানুষি না। আমি চললুম। (কিছুদূর গিয়া হঠাৎ ছুটিয়া ফিরিয়া আসিয়া)
হারে রে রে রে রে—
আমায় ছেড়ে দে রে দে রে।
যেমন ছাড়া বনের পাখি
মনের আনন্দে রে।
ঘন শ্রাবণধারা
যেমন বাঁধনহারা
বাদল বাতাস যেমন ডাকাত