অরূপরতন

সুরঙ্গমা। সে যেন এমনি পর্বতের মতোই চিরদিন কঠিন থাকে। আমার দুঃখ আমার থাক্, সেই কঠিনেরই জয় হউক।

[সুদর্শনার প্রস্থান
সুরঙ্গমার গান
         ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর,
তোমার প্রেম তোমারে এমন করে
                         করেছে নিষ্ঠুর।
তুমি    বসে থাকতে দেবে না যে,
        দিবানিশি তাই তো বাজে
        পরান মাঝে এমন কঠিন সুর॥
    ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর,
        তোমার লাগি দুঃখ আমার
                    হয় যেন মধুর।
        তোমার খোঁজা খোঁজায় মোরে,
        তোমার বেদন কাঁদায় ওরে,
        আরাম যত করে কোথায় দূর॥
[সুরঙ্গমার প্রস্থান
রাজা বিক্রম ও সুবর্ণের প্রবেশ

বিক্রম। কে যে বললে সুদর্শনা এই পথ দিয়ে পালিয়েছে। যুদ্ধে তার বাপকে বন্দী করা মিথ্যে হবে যদি সে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

সুবর্ণ। পালিয়ে যদি গিয়ে থাকে, তাহলে তো বিপদ কেটে গেছে। এখন ক্ষান্ত হোন।

বিক্রম। কেন বলো তো?

সুবর্ণ। দুঃসাহসিকতা হচ্ছে।

বিক্রম। তাই যদি না হবে, তবে কাজে প্রবৃত্ত হয়ে সুখ কী?

সুবর্ণ। কান্তিকরাজকে ভয় না করলেও চলে কিন্তু –

বিক্রম। ওই কিন্তুটাকে ভয় করতে শুরু করলে জগতে টেকা দায় হয়।

সুবর্ণ। মহারাজ, ওই কিন্তুটাকে না হয় মন থেকে উড়িয়ে দিলেন, কিন্তু ও যে বাইরে থেকেই হঠাৎ উড়ে এসে দেখা দেয়। ভেবে দেখুন-না, বাগানে কী কাণ্ডটা হল। খুব করেই আটঘাট বেঁধেছিলেন, তার মধ্যে কোথা থেকে অগ্নিমূর্তি ধরে ঢুকে পড়ল একটা কিন্তু।

বসুসেন ও বিজয়বর্মার প্রবেশ

বসুসেন। অন্তঃপুরে ঘুরে এলুম কোথাও তো তাকে পাওয়া গেল না। দৈবজ্ঞ যে বলেছিল, আমাদের যাত্রা শুভ, সেটা বুঝি মিথ্যা হল।