প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
শ্রীমতী। যিনি অন্তর্যামী তিনিই দেখবেন। বাহির থেকে সব সরিয়ে দিলেন, তাতে আড়াল পড়ে। এখন—
রত্নাবলী। তোমার দিন এবার হয়ে এসেছে, অহংকার ঘুচবে।
শ্রীমতী। তা ঘুচবে। কিছুই বাকি থাকবে না, কিছুই না।
রত্নাবলী। এখন আমার পালা, আমি প্রস্তুত হয়ে আসছি।
ভদ্রা। কিছুই ভালো লাগছে না। বাসবী বুদ্ধিমতী, সে আগেই কোথায় সরে পড়েছে।
অজিতা। আমার কেমন ভয় করছে।
নন্দা। ভগবতী, কোথায় চলেছেন?
উৎপলপর্ণা। উপদ্রব এসেছে নগরে, ধর্ম পীড়িত, শ্রমণেরা শঙ্কিত, আমি পৌরপথে রক্ষামন্ত্র পড়তে চলেছি।
শ্রীমতী। ভগবতী, আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবে না?
উৎপলপর্ণা। কেমন করে নিয়ে যাই? তোমার উপরে যে পূজার আদেশ আছে।
শ্রীমতী। পূজার আদেশ এখনো আছে দেবী?
উৎপলপর্ণা। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সে আদেশের তো অবসান নেই।
মালতী। মাতঃ, কিন্তু রাজার বাধা আছে যে!
উৎপলপর্ণা। ভয় নেই, ধৈর্য ধরো। সে বাধা আপনিই পথ করে দেবে।
ভদ্রা। শুনছ অজিতা, রাস্তায় ও কি ক্রন্দন, না গর্জন।
নন্দা। আমার তো মনে হচ্ছে উদ্যানের ভিতরেই কারা প্রবেশ করে ভাঙচুর করছে। শ্রীমতী, শীঘ্র চলো রাজমহিষী মাতার ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিইগে।
ভদ্রা। এস অজিতা, সমস্তই যেন একটা দুঃস্বপ্ন বলে বোধ হচ্ছে।
মালতী। দিদি, বাইরে ওই যেন মরণের কান্না শুনতে পাচ্ছি। আকাশে দেখছ ওই শিখা! নগরে আগুন লাগল বুঝি? জন্মোৎসবে এই মৃত্যুর তাণ্ডব কেন।
শ্রীমতী। মৃত্যুর সিংহদ্বার দিয়েই জন্মের জয়যাত্রা।
মালতী। মনে ভয় আসছে বলে বড়ো লজ্জা পাচ্ছি দিদি। পূজা করতে যাব, ভয় নিয়ে যাব—এ আমার সহ্য হচ্ছে না।
শ্রীমতী। তোর ভয় কিসের বোন?
মালতী। বিপদের ভয় না। কিছুই যে বুঝতে পারছিনে, অন্ধকার ঠেকছে, তাই ভয়।
শ্রীমতী। আপনাকে এই বাইরে দেখিসনে। আজ যাঁর অক্ষয় জন্ম তাঁর মধ্যে আপনাকে দেখ্, তোর ভয় ঘুচে যাবে।
মালতী। তুমি গান করো দিদি, আমার ভয় যাবে।