নটীর পূজা

বাসবী। অন্যায় বলছ তুমি, আমি কিছুই ভয় করিনে।

রত্নাবলী। আচ্ছা তাহলে অশোকবনে নাচ দেখতে চলো।

বাসবী। কেন যাব না? তুমি ভাবছ আমাকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছ?

রত্নাবলী। আর দেরি নয়, মল্লিকা, শ্রীমতীকে এখনই ডাকো, সাজ হোক বা না হোক। রাজকন্যারা যদি না আসতে চায় রাজকিংকরীদের সবাইকে চাই। নইলে কৌতুক অসম্পূর্ণ থাকবে।

বাসবী। ওই যে শ্রীমতী আসছে। দেখো, দেখো, যেন চলছে স্বপ্নে। যেন মধ্যাহ্নের দীপ্ত মরীচিকা, ওর মধ্যে ও যেন একটুও নেই।

ধীরে ধীরে শ্রীমতীর প্রবেশ ও গান

হে মহাজীবন,    হে মহামরণ,

লইনু শরণ—   লইনু শরণ।

    আঁধার প্রদীপে জ্বালাও শিখা

    পরাও পরাও জ্যোতির টিকা,

    করো হে আমার লজ্জা হরণ।

রত্নাবলী। এইদিকে পথ। আমাদের কথা কি কানে পৌঁছচ্ছে না? এই-যে এইদিকে।

শ্রীমতী।

পরশরতন   তোমারি চরণ,

লইনু শরণ   লইনু শরণ,

    যা-কিছু মলিন, যা-কিছু কালো

    যা-কিছু বিরূপ হোক তা ভালো,

    ঘুচাও ঘুচাও সব আবরণ।

রত্নাবলী। বাসবী, দাঁড়িয়ে রইলে কেন? চলো।

বাসবী। না, আমি যাব না।

রত্নাবলী। কেন যাবে না?

বাসবী। তবে সত্য কথা বলি। আমি পারব না।

রত্নাবলী। ভয় করছে?

বাসবী। হাঁ, ভয় করছে।

রত্নাবলী। ভয় করতে লজ্জা করছে না?

বাসবী। একটুমাত্রও না। শ্রীমতী, সেই ক্ষমার মন্ত্রটা।

শ্রীমতী। উত্তমঙ্গেন বন্দেহং পাদপংসু-বরুত্তমং

        বুদ্ধে যো খলিতো দোসো বুদ্ধো খমতু তং মম।

বাসবী। বুদ্ধো খমতু তং মম! বুদ্ধো খমতু তং মম!

        বুদ্ধো খমতু তং মম!