আসল

বয়স ছিল আট,

    পড়ার ঘরে বসে বসে ভুলে যেতেম পাঠ ।

জানলা দিয়ে দেখা যেত মুখুজ্যেদের বাড়ির পাশে

    একটুখানি পোড়ো জমি, শুকনো শীর্ণ ঘাসে

         দেখায় যেন উপবাসীর মতো।

              পাড়ার আবর্জনা যত

           ওই খানেতেই উঠছে জমে,

                   একধারেতে ক্রমে

পাহাড়-সমান উঁচু হল প্রতিবেশীর রান্নাঘরের ছাই ;

গোটাকয়েক আকন্দগাছ, আর - কোনো গাছ নাই ;

           দশ-বারোটা শালিখপাখি

  তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে দিয়ে করত ডাকাডাকি ;

    দুপুরবেলায় ভাঙা গলায় কাকের দলে

কী যে প্রশ্ন হাঁকত শূন্যে কিসের কৌতূহলে।

 

 

     পাড়ার মধ্যে ঐ জমিটাই কোনো কাজের নয় ;

সবার যাতে নাই প্রয়োজন লক্ষ্মীছাড়ার তাই ছিল সঞ্চয় ;

         তেলের ভাঙা ক্যানেস্তারা, টুকরো হাঁড়ির কানা,

         অনেক কালের জীর্ণ বেতের কেদারা একখানা

ফুটো এনামেলের গেলাস, থিয়েটারের ছেঁড়া বিজ্ঞাপন,

                   মরচে-পড়া টিনের লণ্ঠন,

     সিগারেটের শূন্য বাক্‌স, খোলা চিঠির খাম,

অ - দরকারের মুক্তি হেথায়, অনাদরের অমর স্বর্গধাম।

 

 

          তখন আমার বয়স ছিল আট,

         করতে হত ভূবৃত্তান্ত পাঠ।

    পড়ার ঘরের দেয়ালে চারপাশে

ম্যাপগুলো এই পৃথিবীকে ব্যঙ্গ করত নীরব পরিহাসে ;