মানসী
           ফিরে আসে এ ধরায় একরত্তি ছাই।
   সবারে সাজে না ভালো,            হৃদয়ে স্বর্গের আলো
            আছে যার সেই জ্বালো আকাশের ভালে—
   মাটির প্রদীপ যার                      নিভে-নিভে বারবার
           সে দীপ জ্বলুক তার গৃহের আড়ালে!
   যারা আছে কাছাকাছি            তাহাদের নিয়ে আছি—
           শুধু ভালোবেসে বাঁচি, বাঁচি যত কাল।
   আশা কভু নাহি মেটে              ভূতের বেগার খেটে—
           কাগজে আঁচড় কেটে সকাল বিকাল।
   কিছু নাহি করি দাওয়া,             ছাতে বসে খাই হাওয়া
           যতটুকু পড়ে-পাওয়া ততটুকু ভালো—
   যারা মোরে ভালোবাসে              ঘুরে ফিরে কাছে আসে,
           হাসিখুশি আশেপাশে নয়নের আলো।
   বাহবা যে জন চায়                        বসে থাক্‌ চৌমাথায়,
           নাচুক তৃণের প্রায় পথিকের স্রোতে—
   পরের মুখের বুলি                       ভরুক ভিক্ষার ঝুলি,
           নাই চাল নাই চুলি ধূলির পর্বতে।

   বেড়ে যায় দীর্ঘ ছন্দ,                        লেখনী না হয় বন্ধ,
           বক্তৃতার নামগন্ধ পেলে রক্ষে নেই।
   ফেনা ঢোকে নাকে চোখে,            প্রবল মিলের ঝোঁকে
           ভেসে যাই একরোখে বুঝি দক্ষিণেই।
   বাহিরেতে চেয়ে দেখি                  দেবতাদুর্যোগ এ কী!
           বসে বসে লিখিতে কি আর সরে মন।
   আর্দ্র বায়ু বহে বেগে,                  গাছপালা ওঠে জেগে—
           ঘনঘোর স্নিগ্ধ মেঘে আঁধার গগন।
   বেলা যায়, বৃষ্টি বাড়ে,                বসি আলিসার আড়ে
           ভিজে কাক ডাক ছাড়ে মনের অসুখে।
   রাজপথ জনহীন,                           শুধু পান্থ দুই তিন
           ছাতার ভিতরে লীন ধায় গৃহমুখে।
   বৃষ্টি-ঘেরা চারি ধার,                         ঘনশ্যাম অন্ধকার,
           ঝুপ-ঝুপ শব্দ আর ঝর-ঝর পাতা।
   থেকে থেকে ক্ষণে ক্ষণে                    গুরু গুরু গরজনে