সন্ধ্যায়
     ওগো তুমি, অমনি
সন্ধ্যার মতো হও।
সুদূর
পশ্চিমাচলে            
কনক-আকাশতলে
         
অমনি নিস্তব্ধ চেয়ে রও।
অমনি সুন্দর
শান্ত             
অমনি করুণ কান্ত
         
অমনি নীরব উদাসিনী,
ওইমতো ধীরে
ধীরে              
আমার জীবনতীরে
         
বারেক দাঁড়াও একাকিনী।
জগতের
পরপারে            
নিয়ে যাও আপনারে
         
দিবসনিশার প্রান্তদেশে।
থাক্
হাস্য-উৎসব,            
না আসুক কলরব
         
সংসারের জনহীন শেষে।
এসো তুমি চুপে
চুপে          
শ্রান্তিরূপে নিদ্রারূপে,
         
এসো তুমি নয়ন-আনত।
এসো তুমি ম্লান
হেসে        
দিবাদগ্ধ আয়ুশেষে
         
মরণের আশ্বাসের মতো।
আমি শুধু চেয়ে
থাকি        
অশ্রুহীন-শ্রান্ত-আঁখি,
         
পড়ে থাকি পৃথিবীর’পরে—
খুলে দাও
কেশভার,             
ঘনস্নিগ্ধ অন্ধকার
         
মোরে ঢেকে দিক স্তরে স্তরে।
রাখো এ কপালে
মম         
  নিদ্রার আবেশ-সম
         
হিমস্নিগ্ধ করতলখানি।
বাক্যহীন
স্নেহভরে            
অবশ দেহের’পরে
         
অঞ্চলের প্রান্ত দাও টানি।
তার পরে পলে
পলে           
করুণার অশ্রুজলে
         
ভরে যাক নয়নপল্লব।
সেই স্তব্ধ
আকুলতা             
গভীর বিদায়ব্যথা
        
 কায়মনে করি অনুভব।