বীরপুরুষ

            মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে

            মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।

তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা চড়ে

দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে,

আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ’পরে

            টগ্‌বগিয়ে তোমার পাশে পাশে।

রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে

             রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে।

 

            সন্ধে হল, সূর্য নামে পাটে,

            এলেম যেন জোড়াদিঘির মাঠে।

ধূধূ করে যে দিক - পানে চাই,

কোনোখানে জনমানব নাই,

তুমি যেন আপন - মনে তাই

            ভয় পেয়েছ— ভাবছ, ‘এলেম কোথা!’

আমি বলছি, ‘ভয় কোরো না মা গো,

             ওই দেখা যায় মরা নদীর সোঁতা।’

 

             চোরকাঁটাতে মাঠ রয়েছে ঢেকে,

              মাঝখানেতে পথ গিয়েছে বেঁকে।

গোরু বাছুর নেইকো কোনোখানে,

সন্ধে হতেই গেছে গাঁয়ের পানে,

আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে,

              অন্ধকারে দেখা যায় না ভালো।

তুমি যেন বললে আমায় ডেকে,

              ‘দিঘির ধারে ওই যে কিসের আলো!’

 

              এমন সময় ‘হাঁরে রে রে রে রে,’

              ওই যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে।

তুমি ভয়ে পালকিতে এক কোণে