মানসী

    মনে নেই, বুঝি হবে অগ্রহান মাস ,

               তখন তরণীবাস

                   ছিল মোর পদ্মাবক্ষ- ' পরে।

               বামে বালুচরে

     সর্বশূন্য শুভ্রতার না পাই অবধি।

                ধারে ধারে নদী

কলরবধারা দিয়ে নিঃশব্দেরে করিছে মিনতি।

      ওপারেতে আকাশের প্রশান্ত প্রণতি

          নেমেছে মন্দিরচূড়া- ' পরে।

     হেথা-হোথা পলিমাটিস্তরে

               পাড়ির নিচের তলে

         ছোলা-খেত ভরেছে ফসলে।

অরণ্যে নিবিড় গ্রাম নীলিমার নিম্নান্তের পটে ;

               বাঁধা মোর নৌকাখানি জনশূন্য বালুকার তটে।

 

                   পূর্ণ যৌবনের বেগে

          নিরুদ্দেশ বেদনার জোয়ার উঠেছে মনে জেগে

                   মানসীর মায়ামূর্তি বহি।

          ছন্দের বুনানি গেঁথে অদেখার সাথে কথা কহি।

 

                    ম্লানরৌদ্র অপরাহ্নবেলা

          পান্ডুর জীবন মোর হেরিলাম প্রকান্ড একেলা

               অনারব্ধ সৃজনের বিশ্বকর্তা-সম।

                        সুদূর দুর্গম

                   কোন্‌ পথে যায় শোনা

               অগোচর চরণের স্বপ্নে আনাগোনা।

প্রলাপ বিছায়ে দিনু আগন্তুক অচেনার লাগি,

     আহ্বান পাঠানু শূন্যে তারি পদপরশন মাগি।

 

          শীতের কৃপণ বেলা যায়।