অনসূয়া

কাঁঠালের ভূতি-পচা, আমানি, মাছের যত আঁশ,

               রান্নাঘরের পাঁশ,

     মরা বিড়ালের দেহ, পেঁকো নর্দমায়

বীভৎস মাছির দল ঐকতান-বাদন জমায়।

          শেষরাত্রে মাতাল বাসায়

স্ত্রীকে মারে, গালি দেয় গদ্‌গদ ভাষায়,

          ঘুমভাঙা পাশের বাড়িতে

পাড়াপ্রতিবেশী থাকে হুংকার ছাড়িতে।

               ভদ্রতার বোধ যায় চলে,

     মনে হয় নরহত্যা পাপ নয় ব ' লে।

 

          কুকুরটা, সর্ব অঙ্গে ক্ষত,

     বিছানায় শোয় এসে, আমি নিদ্রাগত।

নিজেরে জানান দেয় তীব্রকণ্ঠে আত্মশ্লাঘী সতী

               রণচন্ডা চন্ডী মূর্তিমতী।

           মোটা সিঁদুরের রেখা আঁকা,

                  হাতে মোটা শাঁখা,

          শাড়ি লাল-পেড়ে,

               খাটো খোঁপা-পিন্ডটুকু ছেড়ে

       ঘোমটার প্রান্ত ওঠে টাকের সীমায় —

অস্থির সমস্ত পাড়া এ মেয়ের সতী-মহিমায়।

 

এ গলিতে বাস মোর, তবু আমি জন্ম-রোমান্টিক —

           আমি সেই পথের পথিক

     যে-পথ দেখায়ে চলে দক্ষিণে বাতাসে,

পাখির ইশারা যায় যে-পথের অলক্ষ্য আকাশে।

          মৌমাছি যে-পথ জানে

               মাধবীর অদৃশ্য আহ্বানে।

          এটা সত্য কিংবা সত্য ওটা

               মোর কাছে মিথ্যা সে তর্কটা।