অকাল ঘুম

             এসেছি অনাহূত।

                   কিছু কৌতুক করব ছিল মনে—

                           আচমকা বাধা দেব অসময়ে

                                   কোমরে - আঁচল - জড়ানো গৃহিণীপনায়।

                             দুয়ারে পা বাড়াতেই চোখে পড়ল—

                                   মেঝের ' পরে এলিয়ে পড়া

                                      ওর অকাল ঘুমের রূপখানি।

 

               দূর পাড়ায় বিয়ে - বাড়িতে বাজছে শানাই সারঙ সুরে।

                      প্রথম প্রহর পেরিয়ে গেছে

                              জ্যৈষ্ঠরৌদ্রে ঝাম্‌রে - পড়া সকাল বেলায়।

               স্তরে স্তরে দুখানি হাত গালের নীচে,

                     ঘুমিয়েছে শিথিলদেহে

                           উৎসবরাতের অবসাদে

                        অসমাপ্ত ঘরকন্নার এক ধারে।

                     কর্মস্রোত নিস্তরঙ্গ ওর অঙ্গে অঙ্গে,

                        অনাবৃষ্টিতে অজয় নদের

                     প্রান্তশায়ী শ্রান্ত জলশেষের মতো।

                   ঈষৎ খোলা ঠোঁটদুটিতে মিলিয়ে আছে

                     মুদে - আসা ফুলের মধুর উদাসীনতা।

           দুটি ঘুমন্ত চোখের কালো পক্ষ্মচ্ছায়া

                     পড়েছে পাণ্ডুর কপোলে।

 

                ক্লান্ত জগৎ চলেছে পা টিপে

                     ওর খোলা জানলার সামনে দিয়ে

                          ওর শান্তনিশ্বাসের ছন্দে।

                                 ঘড়ির ইশারা

                     বধির ঘরে টিক্‌টিক্‌ করছে কোণের টেবিলে,

                       বাতাসে দুলছে দিনপঞ্জী দেয়ালের গায়ে।