শ্যামলী

          আষাঢ়ের সকালে অকস্মাৎ হাওয়ায়

                ঘন মেঘের দুর্গপ্রাচীর

                       পড়ল ভেঙেচুরে।

            ছুটে বেরিয়ে এসেছে

                 প্রভাতের বাঁধন - ছেঁড়া আলো।

               মুক্তির আনন্দঘোষণা

                 বেজে উঠল আকাশে আকাশে

                      আগুনের ভাষায়।

                পাখিদের ছোটো কোমল তনুতে

                     দুরন্ত হয়ে উঠল প্রাণের উৎসুক ছন্দ।

                চলল তাদের সুরের তীর - খেলা

                     কণ্ঠ থেকে কণ্ঠ, শাখা থেকে শাখায়।

                সেতারের দ্রুত তালের বাজন যেন

                     পাতায় পাতায় আলোর চমক।

                          মন দাঁড়িয়ে উঠল ;

                             বললে, আমি পূর্ণ।

                তার অভিষেক হল

                       আপনারই উদ্‌বেল তরঙ্গে।

                 তার আপন সঙ্গ

                       আপনাকে করলে বেষ্টন

                               শিলাতটকে ঝর্নার মতো ;

                       উপচে উঠে মিলতে চলল

                                চার দিকের সব - কিছুর মধ্যে।

 

     চেতনার সঙ্গে আলোর রইল না কোনো ব্যবধান।

                প্রভাতসূর্যের অন্তরে

                     দেখতে পেলেম আপনাকে

                            হিরন্ময় পুরুষ ;

                ডিঙিয়ে গেলেম দেহের বেড়া,

                   পেরিয়ে গেলেম কালের সীমা,

          গান গাইলেম “চাই নে কিছু চাই নে” —

              যেমন গাইছে রক্তপদ্মের রক্তিমা,