কালের যাত্রা
পুরোহিত

তখন যদি রথ আর-একবার অচল হয়

বোধ করি তোমার মতো কবিরই ডাক পড়বে —

তিনি ফুঁ দিয়ে ঘোরাবেন চাকা।

কবি

নিতান্ত ঠাট্টা নয় পুরুতঠাকুর!

রথযাত্রায় কবির ডাক পড়েছে বারে বারে,

কাজের লোকের ভিড় ঠেলে পারে নি সে পৌঁছতে।

পুরোহিত

রথ তারা চালাবে কিসের জোরে। বুঝিয়ে বলো।

কবি

গায়ের জোরে নয়, ছন্দের জোরে।

আমরা মানি ছন্দ, জানি একঝোঁকা হলেই তাল কাটে।

মরে মানুষ সেই অসুন্দরের হাতে

চাল-চলন যার এক পাশে বাঁকা ;

কুম্ভকর্ণের মতো গড়ন যার বেমানান,

যার ভোজন কুৎসিত,

যার ওজন অপরিমিত।

আমরা মানি সুন্দরকে। তোমরা মানো কঠোরকে —

অস্ত্রর কঠোরকে, শাস্ত্রর কঠোরকে।

বাইরে ঠেলা-মারার উপর বিশ্বাস,

অন্তরের তালমানের উপর নয়।

সৈনিক

তুমি তো লম্বা উপদেশ দিয়ে চললে,

ও দিকে যে লাগল আগুন।

কবি

যুগাবসানে লাগেই তো আগুন।

যা ছাই হবার তাই ছাই হয়,

যা টিকে যায় তাই নিয়ে সৃষ্টি হয় নবযুগের।

সৈনিক

তুমি কী করবে কবি!