প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
নাম তার মোতিবিল, বহু দূর জল—
হাঁসগুলি ভেসে ভেসে করে কোলাহল।
পাঁকে চেয়ে থাকে বক, চিল উড়ে চলে,
মাছরাঙা ঝুপ ক’রে পড়ে এসে জলে।
হেথা হোথা ডাঙা জাগে ঘাস দিয়ে ঢাকা,
মাঝে মাঝে জলধারা চলে আঁকাবাঁকা।
কোথাও বা ধানক্ষেত জলে আধো ডোবা,
তারি ‘পরে রোদ পড়ে কিবা তার শোভা।
ডিঙি চ’ড়ে আসে চাষী, কেটে লয় ধান,
বেলা গেলে গাঁয়ে ফেরে গেয়ে সারিগান।
মোষ নিয়ে পার হয় রাখালের ছেলে,
বাঁশে বাঁধা জাল নিয়ে মাছ ধরে জেলে।
মেঘ চলে ভেসে ভেসে আকাশের গায়,
ঘন শেওলার দল জলে ভেসে যায়।
বিনিপিসি, বামি আর দিদি ঐ দিকে আছে। ঐ যে তিনজনে ঘাটে যায়।
বামি ঐ ঘটি নিয়ে যায়। সে মাটি নিয়ে নিজে ঘটি মাজে। রানীদিদি যায় না। রানীদিদি ঘরে। তার যে তিনদিন কাশি। তার কাছে আছে মা, মাসি আর কিনি।
চলো ভাই নীলু। এই তালবন দিয়ে পথ। তার পরে তিলক্ষেত। তার পরে তিসিক্ষেত। তার পর দীঘি। জল খুব নীল। ধারে ধারে কাদা। জলে আলো ঝিলিমিলি করে। বক মিটি মিটি চায় আর মাছ ধরে।
ঐ যে বামি ঘটি নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। ভাই, ঘড়ি আছে কি? দেখি। ছ’টা যে বাজে, আর দেরি নয়। এইবার আমি বাড়ি যাই। তুমি এস পিছে পিছে। পাখী খাবে, দেখ এসে।
এ কী পাখী? এ যে টিয়ে পাখী। ও পাখী কি কিছু কথা বলে? কী কথা বলে? ও বলে রাম রাম হরি হরি। ও কী খায়? ও খায় দানা। রানীদিদি ওর বাটি ভ’রে আনে দানা। বুড়ী দাসী আনে জল।
পাখী কি ওড়ে?
না, পাখী ওড়ে না, ওর পায়ে বেড়ি।
ও আগে ছিল বনে। বনে নদী ছিল, ও নিজে গিয়ে জল খেত।
দীনু এই পাখী পোষে।