প্রথম ভাগ

ছায়ার ঘোমটা মুখে টানি

আছে আমাদের পাড়াখানি।

দীঘি তার মাঝখানটিতে,

তালবন তারি চারিভিতে।

বাঁকা এক সরু গলি বেয়ে

জল নিতে আসে যত মেয়ে।

বাঁশগাছ ঝুঁকে ঝুঁকে পড়ে,

ঝুরু ঝুরু পাতাগুলি নড়ে।

পথের ধারেতে একখানে

হরিমুদী বসেছে দোকানে।

চাল ডাল বেচে তেল নুন,

খয়ের সুপারি বেচে চুন,

ঢেঁকি পেতে ধান ভানে বুড়ী,

খোলা পেতে ভাজে খই মুড়ি।

বিধু গয়লানী মায়ে পোয়

সকাল বেলায় গোরু দোয়।

আঙিনায় কানাই বলাই

রাশি করে সরিষা কলাই।

বড়বউ মেজবউ মিলে

ঘুঁটে দেয় ঘরের পাঁচিলে।


পঞ্চম পাঠ

চুপ ক’রে ব’সে ঘুম পায়। চলো, ঘুরে আসি। ফুল তুলে আনি।

আজ খুব শীত। কচুপাতা থেকে টুপ্‌ টুপ্‌ ক’রে হিম পড়ে। ঘাস ভিজে। পা ভিজে যায়। দুখী বুড়ী উনুন-ধারে উবু হয়ে ব’সে আগুন পোহায় আর গুন্‌ গুন্‌ গান গায়।

গুপী টুপী খুলে শাল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। ওকে চুপি চুপি ডেকে আনি। ওকে নিয়ে যাব কুলবনে। কুল পেড়ে খাব। কুলগাছে টুনটুনি বাসা ক’রে আছে। তাকে কিছু বলিনে।

আজ বুধবার, ছুটি। নুটু তাই খুব খুসি। সেও যাবে কুলবনে। কিছু মুড়ি নেব আর নুন। চড়ি-ভাতি হবে। ঝুড়ি নিতে হবে। তাতে কুল ভ’রে নিয়ে বাড়ি যাব। উমা খুসি হবে। ঊষা খুসি হবে। বেলা হলো। মাঠ ধূ ধূ করে। থেকে থেকে হূ হূ হাওয়া বয়। দূরে ধুলো ওড়ে। চুনি মালী কুয়ো থেকে জল তোলে আর ঘুঘু ডাকে ঘু ঘু।