বন-ফুল
     রটায়ে কলঙ্ক তবে হাসুক না তারা।

বিবাহ কাহারে বলে জানিতে চাহি না—
     তাহারে বাসিব ভাল, ভালবাসি যারে!
তাহারই ভালবাসা করিব কামনা
     যে মোরে বাসে না ভাল, ভালবাসি যারে”।

নীরদ অবাক রহি কিছুক্ষণ পরে
বালিকারে সম্বোধিয়া কহে মৃদুস্বরে,
“সে কী কথা বল বালা, যে জন তোমারে
     বিজন কানন হতে করিয়া উদ্ধার
আনিল, রাখিল যত্নে সুখের আগারে—
     সে কেন গো ভালবাসা পাবে না তোমার?

হৃদয় সঁপেছে যে লো তোমারে নবীনা
     সে কেন গো ভালবাসা পাবে না তোমার?”
কমলা কহিল ধীরে, “আমি তা জানি না”।
     নীরদ সমুচ্চ স্বরে কহিল আবার—

‘ তবে যা লো দুশ্চারিণী! যেথা ইচ্ছা তোর
     কর্ তাই যাহা তোর কহিবে হৃদয়—
কিন্তু যত দিন দেহে প্রাণ রবে মোর—
     তোর এ প্রণয়ে আমি দিব না প্রশ্রয়!

আর তুই পাইবি না দেখিতে আমারে
     জ্বলিব যদিন আমি জীবন-অনলে—
স্বরগে বাসিব ভাল যা খুসী যাহারে
     প্রণয়ে সেথায় যদি পাপ নাহি বলে!

কেন বল্‌ পাগলিনী!    ভালবাসি মোরে
অনলে জ্বালিতে চাস্‌ এ জীবন ভোরে!
বিধাতা যে কি আমার লিখেছে কপালে!
যে গাছে রোপিতে যাই শুকায় সমূলে।'