বন-ফুল
     শোণিতে মৃত্তিকাতল হইল রঞ্জিত!
কমলা চমকি দেখে সভয়ে বিবশা
     দারুণ ছুরিকা পৃষ্ঠে হয়েছে নিহিত!

কমলা সভয়ে শোকে করিল চিৎকার।
     রক্তমাখা হাতে ওই চলিছে বিজয়!
নয়নে আঁচল চাপি কমলা আবার —
     সভয়ে মুদিয়া আঁখি স্থির হয়ে রয়।

আবার মেলিয়া আঁখি মুদিল নয়নে,
     ছুটিয়া চলিল বালা যমুনার জলে—
আবার আইল ফিরি যুবার সদনে,
     যুমনা-শীতল জলে ভিজায়ে আঁচলে।

যুবকের ক্ষত স্থানে বাঁধিয়া আঁচল
     কমলা একেলা বসি রহিল তথায়—
এক বিন্দু পড়িল না নয়নের জল,
     এক বারো বহিল না দীর্ঘশ্বাস-বায়।

তুলি নিল যুবকের মাথা কোল-পরে—
     একদৃষ্টে মুখপানে রহিল চাহিয়া।
নির্জ্জীব প্রতিমা-প্রায় না নড়ে না চড়ে,
     কেবল নিশ্বাস মাত্র যেতেছে বহিয়া।

চেতন পাইয়া যুবা কহে কমলায়,
     ‘যে ছুরীতে ছিঁড়িয়াছে জীবনবন্ধন
অধিক সুতীক্ষ্ম ছুরী তাহা অপেক্ষায়
     আগে হোতে প্রেমরজ্জু করেছে ছেদন।

বন্ধুর ছুরিকা-মাখা দ্বেষহলাহলে
     করেছে হৃদয়ে দেহে আঘাত ভীষণ,