বন-ফুল
এত বলি নীরবিল ক্ষুব্ধ যুবাবর!
     কাঁপিতে লাগিল কমলার কলেবর,
নিবিড় কুন্তল যেন উঠিল ফুলিয়া—
     যুবারে সম্ভাষে বালা, এতেক বলিয়া—

‘কমলা তোমারে আহা ভালবাসে বোলে
     তোমারে করেছে দূর নিষ্ঠুর বিজয়!
প্রেমেরে ডুবাব আজি বিসমৃতির জলে,
     বিসমৃতির জলে আজি ডুবাব হৃদয়!

তবুও বিজয় তুই পাবি কি এ মন?
নিষ্ঠুর! আমারে আর পাবি কি কখন?
পদতলে পড়ি মোর দেহ কর ক্ষয়—
তবু কি পারিবি চিত্ত করিবারে জয়?
তুমিও চলিলে যদি হইয়া উদাস—

কেন গো বহিব তবে এ হৃদি হতাশ?
আমিও গো আভরণ ভূষণ ফেলিয়া
যোগিনী তোমার সাথে যাইব চলিয়া।

যোগিনী হইয়া আমি জন্মেছি যখন
যোগিনী হইয়া প্রাণ করিব বহন।
কাজ কি এ মণি মুক্তা রজত কাঞ্চন—
পরিব বাকলবাস ফুলের ভূষণ।

নীরদ! তোমার পদে লইনু শরণ—
লয়ে যাও যেথা তুমি করিবে গমন!
নতুবা যমুনাজলে    এখনই অবহেলে
ত্যজিব বিষাদদগ্ধ নারীর জীবন!’

পড়িল ভূতলে কেন নীরদ সহসা?