বন-ফুল
     ‘কমলা কিসের তরে করিছ রোদন?’
তা হলে কমলা আজি দিবেক উত্তর,
     কমলা খুলিবে আজি হৃদয়বেদন।

দাঁড়াও— দাঁড়াও যুবা! দেখি একবার,
     যেথা ইচ্ছা হয় তুমি যেও তার পর!
কেন গো রোদন করি শুধাও আবার,
     কমলা আজিকে তার দিবেক উত্তর!

কমলা আজিকে তার দিবেক উত্তর,
     কমলা হৃদয় খুলি দেখাবে তোমায়—
সেথায় রয়েছে লেখা দেখো তার পর
     কমলা রোদন করে কিসের জ্বালায়!’

‘কি কব কমলা আর কি কব তোমায়,
     জনমের মত আজ লইব বিদায়!
ভেঙ্গেছে পাষাণ প্রাণ,    ভেঙ্গেছে সুখের গান—
     এ জন্মে সুখের আশা রাখি নাক আর!

এ জন্মে মুছিব নাক নয়নের ধার!
কত দিন ভেবেছিনু যোগীবেশ ধরে
     ভ্রমিব যেথায় ইচ্ছা কানন-প্রান্তরে।

তবু বিজয়ের তরে    এত দিন ছিনু ঘরে
     হৃদয়ের জ্বালা সব করিয়া গোপন—
হাসি টানি আনি মুখে    এত দিন দুখে দুখে
     ছিলাম, হৃদয় করি অনলে অর্পণ!

কি আর কহিব তোরে—    কালিকে বিজয় মোরে
     কহিল জন্মের মত ছাড়িতে আলয়!
জানেন জগৎস্বামী—    বিজয়ের তরে আমি
     প্রেম বিসর্জ্জিয়াছিনু তুষিতে প্রণয়।’