প্রকৃতির প্রতিশোধ

তৃতীয় পথিক।  হতভাগী জানিস নে রাজপথ দিয়ে

আনাগোনা করে যত নগরের লোক—
ম্লেচ্ছকন্যা, তুই কেন চলিস এ পথে!


বালিকার পথপার্শ্বে বৃক্ষতলে সরিয়া যাওন


একজন বৃদ্ধা।  কে তুমি গা, কার বাছা, চোখে অশ্রুজল,

ভিখারিনী বেশে কেন রয়েছে দাঁড়ায়ে
এক পাশে?


কাঁদিয়া উঠিয়া


বালিকা।    জননী গো আমি অনাথিনী।

বৃদ্ধা।    আহা মরে যাই!

পথিকগণ।    ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না ওরে—

কে গো তুমি, জান না কি অনাচারী রঘু,
তাহারি দুহিতা ও যে!

বৃদ্ধা।    ছি ছি ছি, কী ঘৃণা।!

[প্রস্থান
দেবীমন্দিরের কাছে গিয়া


বালিকা।    জগৎ-জননী মাগো, তুমিও কি মোরে

নেবে না? তুমিও কি, মা ত্যেজিবে অনাথে?
ঘৃণায় সবাই যারে দেয় দূর করে
সে কি, মা, তোমারো কোলে পায় না আশ্রয়?

মন্দিররক্ষক।   দূর হ! দূর হ তুই অনার্যা অশুচি!

কী সাহসে এসেছিস মন্দিরের মাঝে!


জননী ও দুহিতার প্রবেশ


জননী।    আরতির বেলা হল, আয় বাছা আয়।

আয় রে আয় রে মোর বুক-চেরা ধন।
মন্দিরের দীপ হতে কাজল পরাব,
অকল্যাণ যত কিছু যাবে দূর হয়ে।

কন্যা।    ও কে ও মা!

জননী।      ও কেউ না, সরে আয় বাছা।!

[প্রস্থান

বালিকা।   এ কি কেউ না মা! এ কি নিতান্ত অনাথা!

এর কি মা ছিল না গো! ও মা, কোথা তুমি!