প্রকৃতির প্রতিশোধ
পঞ্চম দৃশ্য
গুহাদ্বারে
বালিকা।   না পিতা, ও-সব কথা বলো না আমারে—
শুনে ভয় করে শুধু, বুঝিতে পারি নে।
সন্ন্যাসী।   তবে থাক্‌, তবে তুই কাছে আয় মোর,
দেখি তোর অতিমৃদু স্পর্শ সুকোমল।
আহা, তোর স্পর্শ মোর ধ্যানের মতন—
সীমা হতে নিয়ে যায় অসীমের দ্বারে।


এ কি মায়া? এ কি স্বপ্ন? এ কি মোহঘোর?
জগৎ কি মায়া করে ছায়া হয়ে গিয়ে
করিছে প্রাণের কাছে অনন্তের ভান?


দূরে সরিয়া


বালিকা, এ সব কথা না শুনিবি যদি
সন্ন্যাসীর কাছে তবে এলি কী আশায়?
বালিকা।   আমি শুধু কাছে কাছে রহিব তোমার,
মুখপানে চেয়ে রব বসি পদতলে।
নগরের পথে যবে হইবে বাহির
ওই হাত ধরে আমি যাব সাথে সাথে।
সন্ন্যাসী।   পিঞ্জরের ছোটো পাখি আহা ক্ষীণ অতি,
এরে কেন নিয়ে যাই অনন্তের মাঝে!
ডানা দিয়ে মুখ ঢেকে ভয়ে হল সারা,
আমার বুকের কাছে লুকাইতে চায়!
আহা, তবে নেবে আয়। থাক্‌ মুখ ঢেকে।
বুকের মাঝেতে তবে থাক্‌ লুকাইয়া।
এ কি স্নেহ? আমি কি রে স্নেহ করি এরে?
না না। স্নেহ কোথা মোর! কোথা দ্বেষ ঘৃণা!
কাছে যদি আসে কেহ তাড়াব না তারে,
দূরে যদি থাকে কেহ ডাকিব না কাছে।


প্রকাশ্যে


বাছা, এ আঁধারে তুই কেমনে রহিবি?
তোরা সব ছোটো ছোটো আলোকের প্রাণী।