প্রকৃতির প্রতিশোধ
তুমি যেন স্নেহবাক্যে ডাকিছ আমারে।
নিতান্ত একেলা তুমি রয়েছ যে পিতা—
তাই আর পারিনু না, আসিলাম কাছে।
ও কী প্রভু, কথা কেন কহিছ না তুমি!
ও কী ভাবে চেয়ে আছ মোর মুখপানে!
ভালো লাগিছে না পিতা? যাব তবে চলে?
সন্ন্যাসী। না না, এলি যদি, তবে যাস নে চলিয়া।
আমি তো ডাকি নি তোরে, নিজে এসেছিস!
একটুকু দাঁড়া, তোরে দেখি ভালো করে।
সংসারের পরপারে ছিলেম যে আমি,
সহসা জগৎ হতে কে তোরে পাঠালে?
সেথা হতে সাথে করে কেন নিয়ে এলি
দিবালোক, পুষ্পগন্ধ, স্নিগ্ধ সমীরণ!
কিবা তোর সুধাকণ্ঠ, স্নেহমাখা স্বর!
মরি কী অমিয়াময়ী লাবণ্যপ্রতিমা!
সরলতাময় তোর মুখখানি দেখে
জগতের 'পরে মোর হতেছে বিশ্বাস।
তুই কি রে মিথ্যা মায়া, দু দণ্ডের ভ্রম!
জগতের কাছে তুই ফুটেছিস ফুল
জগৎ কি তোরি মতো এত সত্য হবে!
চল্ বাছা গুহা হতে বাহিরেতে যাই।
সমুদ্রের এক পারে রয়েছে জগৎ,
সমুদ্রের পরপারে আমি বসে আছি,
মাঝেতে রহিলি তুই সোনার তরণী —
জগৎ-অতীত এই পারাবার হতে
মাঝে মাঝে নিয়ে যাবি জগতের কূলে।
[প্রস্থান