প্রকৃতির প্রতিশোধ
স্ত্রী।                  প্রণাম ঠাকুর!
ঘরেতে যেতেছি মোরা।
সন্ন্যাসী।                  সেথায় কে আছে?
স্ত্রী।       শাশুড়ি আছেন মোর, আছেন সোয়ামী,
শত্রুমুখে ছাই দিয়ে দুটি ছেলে আছে।
সন্ন্যাসী।     কী কাজে কাটাও দিন বলো মোরে বাছা!
স্ত্রী।        ঘরকন্না-কাজ আছে, ছেলেপিলে আছে,
গোয়ালে তিনটি গোরু তার করি সেবা,
বিকেলে চরকা কাটি মেয়েটিরে নিয়ে।
সন্ন্যাসী।     সুখেতে কি কাটে দিন? দুঃখ কিছু নেই?
স্ত্রী।       দয়ার শরীর রাজা প্রজার মা-বাপ,
কোনো দুঃখ নেই প্রভু!রামরাজ্যে থাকি।
সন্ন্যাসী।    এটি কি তোমারি মেয়ে বাছা!
স্ত্রী।                  হাঁ ঠাকুর।


কন্যার প্রতি
যা না রে, প্রভুরে গিয়ে কর্ দণ্ডবৎ।
সন্ন্যাসী।    আয় বৎসে, কাছে আয় কোলে করি তোরে।
আসিবি নে! তুই মোরে চিনেছিস বুঝি —
নিষ্ঠুর কঠিন আমি পাষাণ হৃদয়,
আমারে বিশ্বাস করে আসিস নে কাছে!


মাকে টানিয়া
কন্যা।     মা গো, ঘরে চলো।
স্ত্রী।                   তবে প্রণাম ঠাকুর।
সন্ন্যাসী।     যাও বাছা, সুখে থাকো আশীর্বাদ করি।
[সন্ন্যাসী ব্যতীত সকলের প্রস্থান
বসে বসে কী দেখি এ, এই কি রে সুখ!
লঘু সুখ লঘু আশা বাহিয়া বাহিয়া
সংসারসাগরে এরা ভাসিয়া বেড়ায়,
তরঙ্গের নৃত্য-সনে নৃত্য করিতেছে।
দু দিনেতে জীর্ণ হবে এ ক্ষুদ্র তরণী,
আশ্রয়ের সাথে কোথা মজিবে পাথারে।