রুদ্রচণ্ড
অমিয়ার প্রবেশ
আবার রাক্ষসি, তুই আবার আইলি!
এ সংসারে আছে যত আপনার ভাই—
সকলেরে ডেকে আন্‌, পিতার জীবন
সে কুক্কুরদের মুখে করিস নিক্ষেপ।
পিতার শোণিত দিয়ে পুষিস তাদের।
দূর হ রাক্ষসি, তুই এখনি দূর হ।
অমিয়া।    পিতা, পিতা, পায়ে পড়ি, শতবার আমি
দূর হয়ে যাইতেছি এ কুটীর হ’তে—
বোলো না, অমন ক’রে বোলো না আমারে।
বুঝিতে পারি নে যে গো কি আমি করেছি।
চাঁদের সহিত দুটি কথা কয়েছিনু—
কেন পিতা, তার তরে এত শান্তি কেন?
রুদ্রচণ্ড।    চুপ কর্‌, ‘কেন’ ‘কেন’ শুধাস নে আর।
‘দুর হ রাক্ষসি’ এই আদেশ আমার!
দিনরাত্রি, পাপিয়সি, ‘কেন কেন’ করি
করিস নে মোর আদেশের অপমান।
অমিয়া।    কোথা যাব পিতা, আমি পথ যে জানি নে।
কারেও চিনি নে আমি— কি হবে আমার!
পিতা গো, জান ত তুমি, অমিয়া তোমার
নিতান্ত নির্বোধ মেয়ে কিছু সে বুঝে না—
না বুঝে করেছে দোষ ক্ষমা কর তারে।
রুদ্রচণ্ড।    হতভাগী!
অমিয়া।    ক্ষমা কর, ক্ষমা কর পিতা!
আজ রাত্রে দূর ক’রে দিও না আমারে,
এক রাত্রি তরে দাও কুটীরে থাকিতে।
রুদ্রচণ্ড।    শিশুর হৃদয় এ কি পেয়েছিস তুই!
দুই ফোঁটা অশ্রু দিয়ে গলাতে চাহিস!
এখনি ও অশ্রুজল মুছে ফেল্‌ তুই।
অশ্রুজলধারা মোর দু-চক্ষের বিষ।
আর নয়, শোন্‌ শেষ আদেশ আমার—