মালিনী
সে আজি কোথায় গেল। সেদিন, ব্রাহ্মণ,
কেন তুমি আসিলে না? কেন এতক্ষণ
সন্দেহে রহিলে দূরে? বিশ্বে বাহিরিয়া
আজি মোর জাগে ভয়, কেঁপে ওঠে হিয়া,
কী করিব কী বলিব বুঝিতে না পারি—
মহাধর্মতরণীর বালিকাকাণ্ডারী
নাহি জানি কোথা যেতে হবে। মনে হয়
বড়ো একাকিনী আমি— সহস্র সংশয়,
বৃহৎ সংসার, অসংখ্য জটিল পথ,
নানা প্রাণী—দিব্যজ্ঞান ক্ষণপ্রভাবৎ
ক্ষণিকের তরে আসে। তুমি মহাজ্ঞানী
হবে কি সহায় মোর?
সুপ্রিয়।                        বহু ভাগ্য মানি
যদি চাহ মোরে।
মালিনী।                     মাঝে মাঝে নিরুৎসাহ
রুদ্ধ করে দেয় যেন প্রাণের প্রবাহ—
পীড়ন করিতে থাকে নিরুদ্ধ নিশ্বাসে,
থেকে থেকে অকারণ অশ্রুজলে ভাসে
দু-নয়ন কোন্‌ বেদনায়। অকস্মাৎ
আপনার ’পরে যেন পড়ে দৃষ্টিপাত
সহস্র লোকের মাঝে, সেই দুঃসময়ে
তুমি মোর বন্ধু হবে? মন্ত্রগুরু হয়ে
দিবে নবপ্রাণ?
সুপ্রিয়।                     প্রস্তুত রাখিব নিত্য
এ ক্ষুদ্র জীবন।   আমার সকল চিত্ত
সবল নির্মল করি, বুদ্ধি করি শান্ত,
সমর্পণ করি দিব নিয়ত একান্ত
তব কাজে।
প্রতিহারীর প্রবেশ
প্রতিহারী।                        প্রজাগণ দরশন যাচে।
  মালিনী।   আজ নহে, আজ নহে। সকলের কাছে