ভগ্নহৃদয়
এমন কি অপরাধ পারি করিবারে?
তবে কেন, কেন, নাথ, বলো নি আমারে?
যদি সখা, পায়ে ধ’রে      শত-শতবার ক’রে
শুধাই গো, বলিবে কি, কি দোষ করেছি?
অভাগিনী যদি, নাথ, যদি ম’রে যাই—
মরণশয্যায় শুয়ে শেষ ভিক্ষা চাই,
চরণদুখানি ধুয়ে শেষ অশ্রুজলে,
দুখিনী ললিতা তব কেঁদে কেঁদে বলে,
তবুও কি ফিরিবে না?     তবুও কি চাহিবে না?
তবুও কি বলিবে না কি দোষ করেছি!
তবুও কি, সখা, তুমি যাইবে চলিয়া?
একবার ডাকিবে না ‘ললিতা’ বলিয়া?


দ্বাদশ সর্গ
নলিনী বিজয় বিনোদ প্রমোদ অশোক সুরেশ নীরদ ও অনিল
সুরেশ।     যাইতে বলিছ বালা, কোথা যাব আর?
দিগ্বিদিক হারাইয়া     ও রূপ-অনলে গিয়া
এ পতঙ্গ পাখা দুটি পুড়ায়েছে তার!
রূপসী, ক্ষমতা আর নাই উড়িবার!
নলিনী।      রূপ কিছু মোর না যদি থাকিত
    বড়ো হইতাম সুখী,
দেখিতাম যত পতঙ্গ তোমরা
    আসিতে কি লোভ দেখি!
রূপ— রূপ— রূপ— পোড়া রূপ ছাড়া
     আর কিছু মোর নাই?
তোমাদের মত পতঙ্গের দল
চারি দিকে ঘিরে করে কোলাহল,
দিবস রজনী করে জ্বালাতন,
ঝাঁপায়ে পড়ে গো, না মানে বারণ—
পোড়া রূপ থেকে এই যদি হল
    হেন রূপ নাহি চাই!