ভগ্নহৃদয়
আয় সখি, বুকে আয়    , উলসি উঠেছে প্রাণ—
ত্বরা ক’রে যা লো বালা,     বাঁশি আন্‌, বীণা আন্‌!
আজি এ মধুর সাঁঝে     রাখি এ বুকের মাঝে
মধুর মুখানি তোর,     ধীরে ধীরে কর্ গান।
ললিতা।     না সখা, মনের ব্যথা কোরো না গোপন!
যবে অশ্রুজল হায়     উচ্ছ্বসি উঠিতে চায়,
রুধিয়া রেখো না তাহা আমারি কারণ।
চিনি সখা, চিনি তব ও দারুণ হাসি,
ওর চেয়ে কত ভালো অশ্রুজলরাশি।
মাথা খাও, অভাগীরে কোরো না বঞ্চনা,
ছদ্মবেশে আবরিয়া রেখো না যন্ত্রণা!
মমতার অশ্রুজলে     নিভাইব সে অনলে,
ভালো যদি বাস তবে রাখ এ প্রার্থনা!


চতুর্দশ সর্গ
মুরলা ও কবি
কবি।      কত দিন দেখিয়াছি তোরে, লো মুরলে,
একেলা কাঁদিতেছিস বসিয়া বিরলে।
করতলে রাখি মুখ—     কি জানি কিসের দুখ—
বড়ো বড়ো আঁখিদুটি মগ্ন অশ্রুজলে!
বড়ো, সখি, ব্যথা লাগে হেরি তোর মুখ!
এমন করুণ আহা!     ফেটে যায় বুক।
ভালো কি বাসিস কারে?      কত দিন বল্‌
পোষণ করিবি হৃদে হৃদয়-অনল?
যত তোর কথা আছে     বলিস আমার কাছে,
এত স্নেহ কোথা পাবি— এত অশ্রুজল?
মুরলা।     কারে বা ভালো বাসিব কবি গো আমার?
ভালোবাসা সাজে কি গো এই মুরলার?
সখা, এত আমি দীন,     এতই গো গুণহীন,
ভালোবাসিতে যে, কবি, মরি গো লজ্জায়।
যদি ভুলি আপনারে,     যদি ভালোবাসি কারে,