ভগ্নহৃদয়
সবিস্ময়ে নলিনীরে কহিবেন ডেকে,
“যেন হেন মুখ আমি দেখেছিনু প্রিয়া!
কিছুতেই মনে তবু পড়িছে না আর!”
অমনি নলিনীবালা উঠিবে হাসিয়া—
কহিবে, “কল্পনা,কবি, কল্পনা তোমার!”
শুনিয়া হাসিবে কবি, ফিরাবে নয়ন,
নলিনীর পাখীটিরে করিবে আদর—
আমিও সেখান হতে করিব গমন
ভ্রমিয়া বেড়াতে পুনঃ দূর দেশান্তর!
ওঠ্ লো মুরলা তবে— দিক হল শেষ
পর্ লো মুরলা তবে সন্ন্যাসিনীবেশ!
থাক্ থাক্, আজ থাক্, আজ থাক্ আর!
কবিরে দেখিতে হবে আরেকটি বার!
কাল হব সন্ন্যাসিনী, বরিব বিরাগে—
দেখিব আরেক বার যাইবার আগে।
পঞ্চদশ সর্গ
কবি ও মুরলা
মুরলা। কবি গো আমার, যদি আমি ম’রে যাই
তা হলে কি বড়ো কষ্ট হয় গো তোমার?
কবি। ওকি কথা মুরলা লো, বলিতে যে নাই!
তুই ছেলেবেলাকার সঙ্গিনী আমার!
কাঁদিস্ না, কাঁদিস্ না, মোছ্ অশ্রুধার!
আহা, সখি, বড়ো সুখী হই আমি মনে
যদি দেখি প্রেমে তুই পড়েছিস্ কার,
সুখেতে আছিস্ তোরা মিলি দুইজনে!
নিরাশ্রয় মনে আসে কত কি ভাবনা,
কিছুতে অধীর হৃদি মানে না সাত্ত্বনা—
সজনি, অমন সব ভাবনা-আঁধার
ভাবিস্ নে কখনো লো, ভাবিস্ নে আর!
মুরলা। কবি গো, রজনীগন্ধা ফুটেছিল গাছে—