ভগ্নহৃদয়
মুরলা বলিয়া কেহ আছে কি ভুবনে?
মুরলা বলিয়া যারে ভাবিতেছি মনে
সে একটি নিশীথের স্বপ্ন মোহময়,
দেখিব স্বপন ভাঙি মুরলা সে নয়!
নাই তার সুখ দুখ, নাই ভালোবাসা,
নাই কবি— নাই কেহ— নাই কোন আশা!
কেহই সে নয়, আর কেহ তার নাই,
তবে কি ভাবনা আর— যেথা ইচ্ছা যাই!
কিন্তু কবি মোর, আহা ভালোবাসাময়,
আমারে না দেখে যদি তাঁর কষ্ট হয়?
থাম্‌ থাম্‌, মুরলা রে,     কেন মিছে বারে বারে
মনেরে প্রবোধ দিস ও কথা বলিয়া!
শুনিলে জগৎ যে রে উঠিবে হাসিয়া!
চল্‌ তুই, চল্‌ তুই— যেথা ইচ্ছা চল্‌ তুই,
কেহ নাই তোর লাগি কাঁদিবার তরে!
তবে চলিলাম, কবি, দূর দেশান্তরে!
অন্তর্যামী দেবতা গো, শুন একবার,
যদি আমি ভালোবাসি করিবে আমার
কবি যেন সুখী হয়,     নলিনী সে সুখে রয়—
সখারে আমার আমি ভালোবাসি যত
নলিনীবালাও যেন ভালোবাসে তত!
নলিনীবালার যত আছে দুখজ্বালা
সব যেন মোর, হয়, সুখে থাক্‌ বালা!
তবে চলিলাম কবি, আমি চলিলাম—
মুরলা করিছে এই বিদায়প্রণাম!


ষোড়শ সর্গ
ললিতা
কে জানে নাথের কেন হল গো এমন?
জানি না কি ভাবিবারে      যান বিপাশার ধারে,
ললিতার চেয়ে ভালোবাসেন বিজন!