ভগ্নহৃদয়
আমরণ বেড়াইব ধরি তাঁরি হাত!
কিছুতে নারিনু অশ্রু করিতে দমন,
কিছুতে এল না হাসি বিষণ্ন বদনে,
সদাই এড়াতে হ’ত কবির নয়ন,
কাঁদিতে আসিত হ’ত এ আঁধার বনে!
আজিকে সুখের দিন কবির আমার,
হৃদয়ে তিলেক নাহি বিষাদ-আঁধার,
নূতন প্রণয়ে মগ্ন তাঁহার হৃদয়
বিশ্বচরাচর হেরে হাস্যসুধাময়!
এখন, মুরলা আমি, কেন রহি আর?
যেখানেই যান কবি হর্ষে হাসি হাসি
সেথাই দেখিতে পান এ মুখ আমার—
বিষাদের প্রতিমূর্তি অন্ধকাররাশি!
ওঠ্‌ লো মুরলা তবে— দিন হ’ল শেষ!
পর‍্ লো মুরলা তবে সন্ন্যাসিনীবেশ।
বেড়াইবি তীর্থে তীর্থে, ত্যজিবি সংসার—
ভুলে যাবি যত কিছু আছে আপনার!
কত শত দিন কত বর্ষ যাবে চলি—
তখন কপালে তোর পড়েছে ত্রিবলী,
নয়ন হইয়া তোর গেছে জ্যোতিহীন,
কত কত বর্ষ গেছে, গেছে কত দিন—
এই গ্রামে ফিরিয়া আসিবি একবার,
যাইবি মাগিতে ভিক্ষা কবির দুয়ার,
দেখিবি আছেন সুখে নলিনীরে লয়ে
দুইজনে একমন একপ্রাণ হয়ে!
কত-না শুনাইছেন কবিতা তাহারে!
কত-না সাজাইছেন কুসুমের হারে!
মোরে হেরে কবি মোর অবাক্‌ নয়নে
মোর মুখপানে চেয়ে রহিবেন কত,
মনে পড়ি পড়ি করি পড়িবে না মনে
নিশীথের ভুলে-যাওয়া স্বপনের মত!
কতক্ষণ মুখপানে চেয়ে থেকে থেকে