ভগ্নহৃদয়
হা দেবি! হা ভগবতি! জীবন দুর্ভর অতি!
কিছুতে কি পাব নাকো ভালোবাসা তাঁর?
তবে নে মা, কোলে নে মা, কোথাও আশ্রয় দে মা—
একটু স্নেহের ঠাঁই দেখা মা আমার!
চপলার প্রবেশ
চপলা। ললিতাও হলি নাকি মুরলার মত!
তেমনি বিষাদময় আঁখি দুটি নত।
তেমনি মলিন মুখে আছিস কিসের দুখে,
তোদের একি এ হল ভাবি লো কেবল—
চপলারে তোরা বুঝি করিবি পাগল!
ছেলেবেলা বেশ ছিলি, ছিল না তো জ্বালা—
সদা মৃদুহাসিময়ী লাজময়ী বালা।
এক দিন— মনে পড়ে? সরসীর তীরে
বসেছিলি নিরিবিলি, কেবল দেখিতেছিলি
নিজের মুখের ছায়া পড়েছিল নীরে।
বুঝি মেতে গিয়েছিলি রূপে আপনার!
(তোর মত গরবিনী দেখি নি তো আর!)
সহসা পিছন হ’তে ডাকিলাম তোরে,
কি দারুণ শরমেতে গিয়েছিলি ম’রে?
আজ তোর হ’ল কি লো ললিতা আমার?
সে-সব লাজের ভাব নাই যে লো আর!
শুধু বিষাদের হাসি, মুরলার মত!
বল্ তোরা হলি একি? পৃথিবীর মাঝে দেখি
কেবল চপলা সুখী, দুঃখী আর যত!
মোরে কিছু বলিবি নে?— আহা ম’রে যাই!—
অনিল সে কত ক’রে আদর করে যে তোরে
লুকায়ে লুকায়ে আমি যেন দেখি নাই!
ভালো, ভালো, বলিস নে, আমার কি তায়?
চল্ তুই, ললিতা লো, মুরলা যেথায়!
যাহা তোর মনে আছে কহিস তাহারি কাছে,