ভগ্নহৃদয়
হাহা করে ভ্রমিয়াছি বিপাশার তীর!
করেছে দারুণ ঝড়      বজ্রদন্ত কড়্‌মড়্‌,
চারি দিকে অন্ধকার সম্মুখে পশ্চাতে—
মাথার উপরে চাই— একটিও তারা নাই,
সৃষ্টি যেন ঠাঁই নাহি পেতেছে দাঁড়াতে!
সাধ গেছে, ঝটিকার রুদ্রদেবগণ
বিশাল চরণ দিয়া      দলি যায় এই হিয়া—
নিষ্পেষিত করি ফেলে কীটের মতন।
চূর্ণ হয়ে একেবারে মিশে ধূলিরাশে
উড়ে পড়ে চারি দিকে বাতাসে বাতাসে!
অশান্তির এক উপদেবতার মত
নিজের হৃদয়-সাথে যুধিয়াছি কত!
করি অশ্রুবারিপাত      গেছে চলি দিনরাত,
অবশেষে আপনি হলেন পরাভূত!
ইচ্ছা করে ছিঁড়ি ছিঁড়ি হৃদয় আমার
শকুনী গৃধিনীদের যোগাই আহার!
এহেন অসার দীন      হৃদী অতি বলোহীন,
যোগ্য শুধু শিশুর খেলেনা গড়িবার।
এ হৃদি কি বলোবান পুরুষের মন—
সামান্য বহিলে বায় সঘনে কাঁপিবে কায়,
মাটিতে নোয়াবে মাথা লতার মতন!
কেন ধরা, কেন ওরে,     জন্ম দিয়েছিলি মোরে?
এমন অসার লঘু দুর্বল এ প্রাণ?
এখনি গো দ্বিধা হও,     লও মোরে কোলে লও!
এ হীন জীবনশিখা করে গো নির্বাণ!
আর একবার দেখি,     যদি এ হৃদয়
পারি আমি বজ্রবলে করিবারে জয়!
কিন্তু হায় কে আমরা? ভাগ্যের খেলেনা,
প্রচণ্ড অদৃষ্টস্রোতে ক্ষুদ্র তৃণকণা!
অন্তরে দুর্দান্ত হৃদি পড়িছে উঠিছে,
বাহিরে চৌদিকে হতে ঝটিকা ছুটিছে
যা কিছু ধরিতে চাই কিছুই খুঁজে না পাই,