ভগ্নহৃদয়
হেন নীচ হৃদয়েরে ভালোবাসা সাজে!
ভালো আমি বাসি তোরে,     চিরকাল বাসিব রে,
তবু চাহি নাকো আমি তোর ভালোবাসা—
লয়ে তোর নিজ মন     সুখে থাক্‌ অনুক্ষণ,
হেন নীচ হৃদয়ের রাখিস নে আশা!
বলো লো কিসের ব্যথা পেয়েছিস মনে?
থাক্‌, থাক্‌, কাজ নেই, থাক্‌ তা গোপনে—
হয়েছে, তো যা হবার,     বলে তা কি হবে আর!
হয়ত আমিই কিছু করিয়াছি দোষ!
কাজ কি সে কথা তুলে,     সে-সব যা না লো ভুলে,
একবার কাছে আয় এইখেনে বোস্‌!
আধেক আধর-ভরা দেখি সেই হাসি,
ঢাল্‌ লো তৃষিত নেত্রে সুধা রাশি রাশি!
সখি মুখ তুলে চ’লো,     একটি কথা ক’না লো—
ললিতা রে, মৌন হয়ে থাকিস নে আর!
একবার দয়া করে কর তিরস্কার!
সন্ধ্যা হয়ে আসিয়াছে গেল দিনমান—
একটি রাখিবি কথা?     গাহিবি কি গান?
ললিতার গান
বুঝেছি বুঝেছি সখা, ভেঙেছে প্রণয়,
ও মিছা আদর তবে না করিলে নয়?
ও শুধু বাড়ায় ব্যথা—     সে-সব পুরাণো কথা
মনে করে দেয় শুধু, ভাঙে এ হৃদয়।
প্রতি হাসি, প্রতি কথা, প্রতি ব্যবহার—
আমি যত বুঝি তব কে বুঝিবে আর!
প্রেম যদি ভুলে থাক     সত্য ক’রে বল’-নাকো,
করিব না মুহূর্তের তরে তিরস্কার!
আমি তো বলেই ছিনু ক্ষুদ্র আমি নারী,
তোমার ও প্রণয়ের নহি অধিকারী।
আর কারে ভালোবেসে      সুখী যদি হও শেষে
তাই ভালোবেসো নাথ, না করি বারণ।