ভগ্নহৃদয়
ললিতার প্রবেশ
অভাগার কাছ হতে সবে দুরে র’ক।
যাই যাই ভেসে যাই— যা হবার হবে তাই—
কে আছে আমার তরে করিবারে শোক?
এই যে, এই যে হেথা, ললিতা আমার,
আয়, আয়, মুখখানি দেখি একবার!
আসিবি কি ফিরে যাবি     তাই যেন ভাবি ভাবি
অতি ধীর মৃদুগতি সংকোচে তোমার—
আয় বুকে ছুটে আয়,     ভাবিস নে আর!
কেন লো ললিতারাণি,     বিষণ্ন ও মুখখানি?
কেন লো অধরে নাই হাসির আভাস?
নয়ন এ মুখে কেন      চাহিতে চাহে না যেন—
কি কথা রয়েছে মনে,      বলিতে না চাস্‌!
অপরাধ করেছি কি প্রেয়সী আমার?
বল্‌ লো কি শান্তি মোরে দিতে চাস তার!
যা দিবি তাহাই সব,      মাথায় পাতিয়া লব,
তাহে যদি প্রায়শ্চিত্ত হয় লো তাহার!
সজনি, জানিস্‌ হা রে,      ভালো তুই বাসিস যারে
মন তার অতি নীচ, অতি অন্ধকার!
অপরাধ করিবে সে, আশ্চর্য কি তার?
সখি লো, মার্জনা তুই করিস নে তারে,
চিরকাল ঘৃণা কর্ হৃদয়মাঝারে!
সখি, তুই কেন ভালো বাসিলি আমায়
তাই ভেবে দিবানিশি মরি যাতনায়!
কেন, সখি, দুজনের     দেখা হল আমাদের,
দারুণ মিলন হেন কেন হল হায়?
জানি যে রে এ হৃদয় দারুণকলঙ্কময়!
কি ব’লে দিব এ হৃদি চরণে তোমার!
চরণে ফেল লো দলি হেন উপহার!
সতত শরমে বিঁধি লুকাতে চাহি এ হৃদি—
এ হৃদে বাসিলে ভালো মরে যাই লাজে,