ভগ্নহৃদয়
তোর নহে সুখের জীবন!
যেথা দিয়া তুই যাস পদতলে চারি পাশ
ফুলেরা খুলিয়া দেয় প্রাণ!
বুকের উপর দিয়া যাস তুই মাড়াইয়া,
কিছু না করিস অবধান।
শুনিতে মুখের কথা আকুল হইয়া লতা
কত তোরে সাধাসাধি করে—
দুটা কথা শুনিলি বা, দুটি কথা বলিলি বা,
চলে যাস দূর দূরান্তরে!
পাখীরা খুলিয়া প্রাণ করে তোর গুণগান,
চারি দিকে উঠে প্রতিধ্বনি:
বকুলের বালিকারা হইয়া আপনা-হারা
ঝরি পড়ে সুখেতে অমনি!
তবু রে বসন্ত সমীরণ,
তোর নহে সুখের জীবন!
আছে যশ, আছে মান, আছে শত মন প্রাণ—
শুধু এ সংসারে তোর নাই
এক তিল দাঁড়াবার ঠাঁই!
তাই রে জোছনারাতে অথবা বসন্তপ্রাতে
গাস যবে উল্লাসের গান,
সে রাগিণী মনোমাঝে বিষাদের সুরে বাজে,
হাহাকার করে তাহে প্রাণ!
শোন্ বলি বসন্তের বায়,
হৃদয়ের লতাকুঞ্জে আয়—
শ্যামল বাহুর ডোরে বাঁধিয়া রাখিব তোরে
ছোটো সেই কুঞ্জটির ছায়!
তুই সেথা র’স যদি তবে সেথা নিরবধি
মধুর বসন্ত জেগে রবে,
প্রতি দিন শত শত নব নব ফুল যত
ফুটিবেক, তোরি সব হবে।
তোরি নাম ডাকি ডাকি একটি গাহিবে পাখি,