ভগ্নহৃদয়
সখি, তোরা বল্‌ দেখি,   সত্য চ’লে গেল সে কি?‍
ফিরায়ে কি লইল হৃদয়?
এবার যদি সে আসে    যাইব তাহার পাশে,
ভালো করে কথা কব হেসে—
গান গাব তার কাছে এসে?
এত দূরে গেছে তার মন,
গলাতে কি নারিব এখন?


পঞ্চবিংশ সর্গ
মুরলা
ওই ধীরে সন্ধ্যা হয়-হয়!
গ্রামের কানন হল অন্ধকারময়!
যতই ঘনায়ে আসে সন্ধ্যার আঁধার—
কাঁদিয়া ওঠে গো কেন হৃদয় আমার?
দুঃখ যেন অতিশয় ধীরে ধীরে আসে—
পা টিপিয়া, পা টিপিয়া, বসে মোর পাশে!
মরমেতে আঁখি রাখে,     এক দৃষ্টে চেয়ে থাকে
কী মন্ত্র পড়িতে থাকে বুকের উপরে!
কেন গো এমন হয় প্রাণের ভিতরে?
সন্ধ্যাদীপ ঘরে ঘরে উঠিল জ্বলিয়া—
বাহিরে যে দিকে চাই      কিছু না দেখিতে পাই—
আঁধার বিশালকায় আছে ঘুমাইয়া!
ভিতরে কুঁড়ের বুকে     নিভৃতে মনের সুখে
ছোটো ছোটো আলোগুলি রয়েছে জাগিয়া!
আমার আলয় নাই— ভাই নাই, বন্ধু নাই,
কেহ নাই এক তিল করিবারে স্নেহ—
দিবস ফুরায়ে এলে মোর তরে কহে
জ্বালায়ে রাখে না কভু প্রদীপটি ঘরে,
পথপানে চেয়ে কেহ নাই মোর তরে!
দিবসের শ্রমে ক্লান্ত—সন্ধ্যা যবে হয়
কোথায় যে যাব, নাই স্নেহের আলয়!