ভগ্নহৃদয়
বিরাম বিশ্রাম নাই—      আদর যতন নাই—
পথপ্রান্তে ধূলি’পরে করি গো শয়ন,
চেয়ে দেখিবার লোক নাই এক জন।
অন্ধকার শাখা মেলি শুধু বৃক্ষ যত
কী ক’রে যে চেয়ে থাকে অবাকের মতো!
তারকার স্নেহশূন্য লক্ষ লক্ষ আঁখি
এক দৃষ্টে চেয়ে থাকে দূরাকাশে থাকি!
স্নেহের অভাব মনে জেগে উঠে কেন?
আশ্রয়ের তরে মন হুহু করে যেন!
এত লক্ষ লক্ষ আছে সুখের কুটীর,
একটিও নহে ওর এই অভাগীর!
সারাদিন নিরাশ্রয় ঘুরিয়া বেড়াই,
সন্ধ্যায় যে কোথা যাব তারো নাই ঠাঁই!
কত শত দিন হল ছেড়েছি আলয়—
আজো কেন ফিরে যেতে তবু সাধ হয়?
ঘুরে ঘুরে পথশ্রান্ত, নাই দিগ্বিদিক—
আকাশ মাথার ’পরে চেয়ে অনিমিখ!
লক্ষ্য নাই, আশা নাই, কিছু নাই চিতে—
এমন ক’দিন আর পারিব থাকিতে?
আহা সে চপলা মোর, থাকিত সে কাছে।
হয়তো তাহার মনে ব্যথা লাগিয়াছে!
আমি কোথা হ’তে এক আসিয়া আঁধার
মলিন করিয়া দিনু হৃদয় তাহার।
সদাই সে থাকে আহা প্রমোদের ভরে,
মুহূর্ত সে মোর তরে কাঁদিবে কেন রে?
এতক্ষণে কবি মোর এসেছে ভবনে,
কে রয়েছে তাঁর তরে বসি বাতায়নে?
পদশব্দ শুনি তাঁর ত্বরায় অমনি
দিতেছে দুয়ার খুলি কে গো সে রমণী!
প্রতিদিন মালা গেঁথে দিতাম যেমন,
আজো কি তেমনি কেহ করে গো রচন?
হয়তো আলয় তাঁর রয়েছে আঁধার,