ভগ্নহৃদয়
হয়তো কেহই নাই বাতায়নে তার।
হয়তো গো কবি মোর ম্রিয়মাণ মন,
কেহ নাই যার সাথে কথাটিও কন!
হয়তো গো মুরলার তরে মাঝে মাঝে
করুণ হৃদয়ে তাঁর ব্যথা বড়ো বাজে!
হা নিষ্ঠুর মুরলা রে, কেন ছেড়ে এলি তাঁরে
নিতান্ত একেলা ফেলি কবিরে আমার—
হয়তো রে তোর তরে প্রাণ কাঁদে তাঁর!
বড়ো স্বার্থপর তুই, নয় দুঃখে তোর
কাঁদিয়া কাটিয়া হ’ত এ জীবন ভোর,
তাই কি ফেলিয়া আসে কবিরে একলা!
ফিরে চল্‌ মুরলা রে, চল্‌ এই বেলা!
হা অভাগী, সন্ন্যাসিনী, আবার, আবার?
কোথা কবি? কোন্‌ কবি? কে গো সে তোমার?
মাঝে মাঝে দেখিস রে একি স্বপ্ন মিছে!
স্বপনের অশ্রুজল ত্বরা ফেল মুছে!
জীবনের স্বপ্ন তোর ভাঙিবে ত্বরায়—
জীবনের দিন তোর ফুরায়-ফুরায়!
ওই দেখ্‌ মৃত্যু তোর সমুখে বসিয়া
কঙ্কালের ক্রোড় তার আছে প্রসারিয়া!
সম্বন্ধ হয়েছে তোর মরণের সাথে,—
দে রে তোর হাত তার অস্থিময় হাতে!
এ সংসারে কেহ যদি তোরে ভালোবাসে
সে কেবল ওই মৃত্যু—ওই রে আকাশে!
গুরুভার রক্তহীন হিমহস্তে তার
আলিঙ্গন করেছে সে হৃদয় তোমার!
হে মরণ! প্রিয়তম— স্বামী গো, জীবন মম,
কবে আমাদের সেই সম্মিলন হবে?
জীবনের মৃতুশয্যা তেয়াগিব কবে?