ভগ্নহৃদয়
রাখ হাত দুইখানি হাতের উপর!
কবি গো, স্বপ্নেও আমি ভাবি নাই কভু
শেষদিনে এত সুখ হবে মোর প্রভু।
এখনো এল না ফুল! সখা গো আমার,
বড়ো যে হতেছি শ্রান্ত, পারি নে যে আর!


ফুল লইয়া অনিলের প্রবেশ
[অনিলের প্রতি]   ললিতা কেমন আছে? বল ভাই বল!
[অনিল।    ললিতা কেমন আছে? সে আছে রে ভালো!
মুরলা।     চিরকাল ভালো যেন থাকে আদরিণী,
চিরকাল পতিসুখে থাকে সোহাগিনী!
কথা ক’চপলা, সখি, মাথা খা আমার—
নীরবে নীরবে বসি কাঁদিস না আর!
মরণের দিনে দুঃখ রয়ে গেল চিতে।
হাসিখুশি মুখ তোর পেনু না দেখিতে!
সুখে থাক্‌— সখি, তুই চিরসুখে থাক্‌—
হাসিয়া খেলিয়া তোর এ জীবন যাক্‌!
ওই-যে এসেছে মালা— কবি গো, ত্বরায়
পরায়ে দাও গো তাহা এ মোর গলায়।
এই লও হাত মোর রাখ তব হাতে—
ছেলেবেলা হতে মোরে      কত দয়া স্নেহ ক’রে
রেখেছ এ হাত ধরি তব সাথে সাথে,
আবার মোদের যবে হইবে মিলন
এ হাত আমার, কবি, করিও গ্রহণ—
যেথা যাবে সেথা রব,     দুই জনে এক হব,
অনন্ত বাঁধনে রবে অনন্ত জীবন!
কবি।      বিবাহ মোদের আজ হল এই তবে,
ফুল যেথা না শুকায়      সদা ফুটে শোভা পায়
সেথায় আরেক দিন ফুলশয্যা হবে!
মুরলা।     [কবিকে]     এসো কবি, বুকে এসো!
[অনিলকে]     এসো ভাই, কাছে বসো!