প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
সে কি অমনি হবে?
আপনাকে সে করুক না বশ, মজুক প্রেমের রসে,
সে কি অমনি হবে?
আমাকে যে কাঁদাবে তার ভাগ্যে আছে কাঁদন,
সে কি অমনি হবে?
২। কিন্তু বাবাঠাকুর, তোমার গায়ে য়দি হাত তোলে সইতে পারব না।
ধনঞ্জয়। আমার এই গা বিকিয়েছি যাঁর পায়ে তিনি যদি সন, তবে তোদেরও সইবে।
১। আচ্ছা, চলো ঠাকুর, শুনে আসি, শুনিয়ে আসি, তার পরে কপালে যা থাকে।
ধনঞ্জয়। তবে তোরা এইখানে বোস্, এ জায়গায় কখনো আসি নি, পথঘাটের খবরটা নিয়ে আসি।
১। দেখেছিস ভাই, কী চেহারা ঐ উত্তরকূটের মানুষগুলোর? যেন একতাল মাংস নিয়ে বিধাতা গড়তে শুরু করেছিলেন শেষ করে উঠতে ফুরসৎ পান নি।
২। আর দেখেছিস ওদের মালকোঁচা মেরে কাপড় পরবার ধরনটা?
৩। যেন নিজেকে বস্তায় বেঁধেছে, একটুখানি পাছে লোকসান হয়।
১। ওরা মজুরি করবার জন্যেই জন্ম নিয়েছে, কেবল সাত ঘাটের জল পেরিয়ে সাত হাটেই ঘুরে বেড়ায়।
২। ওদের যে শিক্ষাই নেই, ওদের যা শাস্তর তার মধ্যে আছে কী?
১। কিচ্ছু না, কিচ্ছু না, দেখিস নি তার অক্ষরগুলো উইপোকার মতো।
২। উইপোকাই তো বটে। ওদের বিদ্যে যেখানে লাগে সেখানে কেটে টুকরো টুকরো করে।
৩। আর গড়ে তোলে মাটির ঢিবি।
২। ওদের অস্তর দিয়ে মারে প্রাণটাকে, আর শাস্তর দিয়ে মারে মনটাকে।
১। পাপ, পাপ! আমাদের গুরু বলে ওদের ছায়া মাড়ানো নৈব নৈবচ। কেন জানিস?
৩। কেন বল তো?
২। তা জানিস নে? সমুদ্রমন্থনের পর দেবতার ভাঁড় থেকে অমৃত গড়িয়ে যে মাটিতে পড়েছিল আমাদের শিবতরাইয়ের পূর্বপুরুষ সেই মাটি দিয়ে গড়া। আর দৈত্যরা যখন দেবতার উচ্ছিষ্ট ভাঁড় চেটে চেটে নর্দমায় ফেলে দিলে তখন সেই ভাঁড়-ভাঙা পোড়া-মাটি দিয়ে উত্তরকূটের মানুষকে গড়া হয়। তাই ওরা শক্ত, কিন্তু থুঃ— অপবিত্র।
৩। এ তুই কোথায় পেলি?
২। স্বয়ং গুরু বলে দিয়েছেন।
৩। (উদ্দেশে প্রণাম করিয়া) গুরু, তুমিই সত্য।
উ ১। আর সব হল ভালো,কিন্তু কামারের ছেলে বিভূতিকে রাজা একেবারে ক্ষত্রিয় করে নিলে সেটা তো-
উ ২। ও সব হল ঘরের কথা, সে আমাদের গাঁয়ে ফিরে গিয়ে বুঝে পড়ে নেব। এখন বল্, জয় যন্ত্ররাজ বিভূতির জয়।