নটরাজ
বসন্ত

তাই আজি ধরিত্রীর যত কর্ম, যত প্রয়োজন

হল অবসান।

বৃক্ষশাখা রিক্তভার, ফলে তার নিরাসক্ত মন,

খেতে নাই ধান।

বকুলে বকুলে শুধু মধুকর উঠিছে গুঞ্জরি,

অকারণ আন্দোলনে চঞ্চলিছে অশোকমঞ্জরী,

কিশলয়ে কিশলয়ে নৃত্য উঠে দিবসশর্বরী

বনে জাগে গান।

 

হে বসন্ত, হে সুন্দর, হায় হায়, তোমার করুণা

ক্ষণকাল তরে।

মিলাইবে এ উৎ সব, এই হাসি, এই দেখাশুনা

শূন্য নীলাম্বরে।

নিকুঞ্জের বর্ণচ্ছটা একদিন বিচ্ছেদবেলায়

ভেসে যাবে বৎ সরান্তে রক্তসন্ধ্যাস্বপ্নের ভেলায়,

বনের মঞ্জীরধ্বনি অবসন্ন হবে নিরালায়

শ্রান্তিক্লান্তিভরে।

 

তোমারে করিবে বন্দী নিত্যকাল মৃত্তিকাশৃঙ্খলে

শক্তি আছে কার?

ইচ্ছায় বন্ধন লও, সে বন্ধন ইন্দ্রজালবলে

কর অলংকার।

সে বন্ধন দোলরজ্জু, স্বর্গে মর্ত্যে দোলে ছন্দভরে,

সে বন্ধন শ্বেতপদ্ম, বাণীর মানসসরোবরে,

সে বন্ধন বীণাতন্ত্র, সুরে সুরে সংগীতনির্ঝরে

বর্ষিছে ঝংকার।

 

নন্দনে আনন্দ তুমি, এই মর্ত্যে, হে মর্ত্যের প্রিয়

নিত্য নাই হলে।

সুদূর মাধুর্য-পানে তব স্পর্শ, অনির্বচনীয়,