প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
যদি বা নিশি যায় যাব না, যাব না।
যখনই চলে যাই
আসিব বলে যাই,
আলো ছায়ার পথে করি আনাগোনা।
দোলাতে দোলে মন মিলনে বিরহে।
বারে বারেই জানি তুমি তো চির হে।
ক্ষণিক আড়ালে
বারেক দাঁড়ালে
মরি ভয়ে ভয়ে পাব কি পাব না।
নীরবালা। বড়ো নিশ্চিন্ত হলুম। তা হলে ঘুমোতে পারি।
অক্ষয়। নির্ভয়ে।
শৈলবালা। মুখুজ্জেমশায়, আমি ঠাট্টা করছি নে— আমি চিরকুমার-সভার সভ্য হব। কিন্তু আমার সঙ্গে পরিচিত একজন কাউকে চাই তো। তোমার বুঝি আর সভ্য হবার জো নেই?
অক্ষয়। না, আমি পাপ করেছি। তোমার দিদি আমার তপস্যা ভঙ্গ করে আমাকে স্বর্গ হতে বঞ্চিত করেছেন।
শৈলবালা। তা হলে রসিকদাদাকে ধরতে হচ্ছে। তিনি তো কোনো সভার সভ্য না হয়েও চিরকুমার-ব্রত রক্ষা করেছেন।
অক্ষয়। সভ্য হলেই এই বুড়োবয়সে ব্রতটি খোয়াবেন। ইলিশমাছ অমনি দিব্যি থাকে, ধরলেই মারা যায়; প্রতিজ্ঞাও ঠিক তাই, তাকে বাঁধলেই তার সর্বনাশ।
অক্ষয়। ওরে পাষণ্ড, ভণ্ড, অকালকুষ্মাণ্ড।
রসিক। কেন হে মত্তমন্থর কুঞ্জকুঞ্জর পুঞ্জঅঞ্জনবর্ণ।
অক্ষয়। তুমি আমার শ্যালী-পুষ্পবনে দাবানল আনতে চাও?
শৈলবালা। রসিকদাদা, তোমারই বা তাতে কী লাভ।
রসিক। ভাই, সইতে পারলুম না, কী করি। বছরে বছরেই তোর বোনদের বয়স বাড়ছে, বড়োমা আমারই দোষ দেন কেন। বলেন, দুবেলা বসে বসে কেবল খাচ্ছ, মেয়েদের জন্যে দুটো বর দেখে দিতে পার না। আচ্ছা ভাই, আমি না খেতে রাজি আছি, তা হলেই বর জুটবে না তোর বোনদের বয়স কমতে থাকবে? এ দিকে যে-দুটির বর জুটছে না তাঁরা তো দিব্যি খাচ্ছেন দাচ্ছেন। শৈলভাই, কুমারসম্ভবে পড়েছিস, মনে আছে তো?—
স্বয়ং বিশীর্ণদ্রুমপর্ণবৃত্তিতা
পরা হি কাষ্ঠা তপসস্তয়া পুনঃ।
তদপ্যপাকীর্ণমতঃ প্রিয়ংবদাং
বদন্ত্যপর্ণেতি চ তাং পুরাবিদঃ।