কালের যাত্রা

বাজা ভাই, শাঁখ বাজা —

রথ না চললে কিছুই চলবে না।

চড়বে না হাঁড়ি, বুলবুলিতে খেয়ে যাবে ধান।

এরই মধ্যে আমার মেজো ছেলের গেছে চাকরি,

তার বউটা শুষছে জ্বরে। কপালে কী আছে জানি নে।

প্রথম নাগরিক

মেয়েমানুষ, তোমরা এখানে কী করতে।

কালের রথযাত্রায় কোনো হাত নেই তোমাদের।

কুটনো কোটো গে ঘরে।

দ্বিতীয়া

কেন, পুজো দিতে তো পারি।

আমরা না থাকলে পুরুতের পেট হত না এত মোটা।

গড় করি তোমায় দড়ি-নারায়ণ! প্রসন্ন হও।

এনেছি তোমার ভোগ। ওলো, ঢাল্‌ ঢাল্‌ ঘি,

ঢাল্‌ দুধ, গঙ্গাজলের ঘটি কোথায়,

ঢেলে দে-না জল। পঞ্চগব্য রাখ্‌ ঐখানে,

জ্বালা পঞ্চপ্রদীপ। বাবা দড়ি-নারায়ণ,

এই আমার মানত রইল, তুমি যখন নড়বে

মাথা মুড়িয়ে চুল দেব ফেলে।

তৃতীয়া

এক মাস ছেড়ে দেব ভাত, খাব শুধু রুটি।

বলো-না ভাই, সবাই মিলে — জয় দড়ি-নারায়ণের জয়।

প্রথম নাগরিক

কোথাকার মূর্খ তোরা —

দে মহাকালনাথের জয়ধ্বনি।

প্রথমা

কোথায় তোমাদের মহাকালনাথ? দেখি নে তো চক্ষে।

দড়ি-প্রভুকে দেখছি প্রত্যক্ষ —

হনুমানপ্রভুর লঙ্কা-পোড়ানো লেজখানার মতো —

কী মোটা, কী কালো, আহা দেখে চক্ষু সার্থক হল।

মরণকালে ওই দড়ি-ধোওয়া জল ছিটিয়ে দিয়ো আমার মাথায়।