প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
রামচরণের প্রবেশ ও ভূমিষ্ঠ হইয়া দৌলতকে প্রণাম
রামচরণ। মামা, তোমার বক্তৃতায় বড়ো লজ্জা দিয়েছ।
দৌলত। কে হে বাপু, কে তুমি?
রামচরণ। আজ্ঞে, আপনারই ভাগ্নে রামচরণ। ইস্টিশনে লোক পাঠিয়ে দিন — সেখেনে একটি পুঁটুলি আর বুড়ি মাকে রেখে এসেছি।
দৌলত। এখানে কী করতে আসা?
রামচরণ। বাস করতে।
দৌলত। আর কোথাও বাসস্থান নেই?
রামচরণ। একরকম আছে বটে, কিন্তু সেখানে স্বার্থত্যাগ শিক্ষা হয় না।
দৌলত। ( ভীতভাবে) কানাই!
কানাই। আপনার উপদেশ উনি যেরকম দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করেছেন ওঁকে বোধ হয় নড়ানো শক্ত হবে।
নিতাইয়ের প্রবেশ
নিতাই। দাদা, চাকরি ছেড়ে এলুম, নইলে তোমার যে নিন্দে হয়। কে আছিস রে! ঝট্ করে দুটো ডাব পেড়ে নিয়ে আয় তো। বড়ো পিপাসা লেগেছে।
নদেরচাঁদের প্রবেশ
নদেরচাঁদ। এই লও খুড়ো, আমার সমস্ত স্বার্থ বিসর্জন দিতে এসেছি। এই আমার ভাঙা বোক্নো, থেলো হুঁকো আর এই বেড়ালছানাটি। এর মধ্যে ও-দুটো পৈতৃক সম্পত্তি, বেড়ালছানা আমার স্বোপার্জিত। আর আমার দোষ দিতে পারবে না, তোমার এখানেই আমি লেগে রইলুম।
দর্জির প্রবেশ
দৌলত। তুমি আমার কে হও বাপু?
দর্জি। আজ্ঞে আমি দর্জি, আপনার গায়ের মাপ নিতে এসেছি।
দৌলত। এখন যাও, টানাটানির সময়। এখন আমি কাপড় করাতে পারব না।
নদেরচাঁদ। খলিফাজি, যাও কোথায়। আমার গায়ের মাপটা নেও। খুড়োর গায়ে যেরকম ফুলকাটা ছিটের জামা দেখছি অমনি ছ-জোড়া হলেই আমার চলে যাবে। যদি বেশ ভালো রকম করে তৈরি করে দিতে পারো তো খুড়ো তোমাকে খুশি করে দেবেন, বুঝেছ খালিফাজি?
দর্জি। যে আজ্ঞে।
গায়ের মাপ-লওন
বালক-সমেত পরেশনাথের প্রবেশ
পরেশ। ( দৌলতকে প্রণাম করিয়া বালকের প্রতি) তোর জ্যাঠামশায়কে প্রণাম কর্। দাদা, এই লও তোমার ভ্রাতুষ্পুত্র।
দৌলত। আমার ভ্রাতুষ্পুত্র!
পরেশ। যাকে চলিত বাংলায় বলে ভাইপো। দাদা যে একেবারে অবাক্। ভাতৃ শব্দের ষষ্ঠীতে হয় ভ্রাতুঃ, তার উপরে পুত্র শব্দ যোগ করলেই হল ভ্রাতুষ্পুত্র। স্বয়ং পাণিনি বোপদেব রয়েছেন, অন্য প্রমাণের প্রয়োজন কী? অতএব ইনি হলেন ভাইপো।